চলে গেলেন অভিনেতা মজিবুর রহমান দিলু

19 Jan 2021, 04:48 PM শ্রদ্ধাঞ্জলি শেয়ার:
চলে গেলেন অভিনেতা মজিবুর রহমান দিলু

বীর মুক্তিযোদ্ধা, অভিনেতা, নাট্য পরিচালক মজিবুর রহমান দিলু ১৯ জানুয়ারি, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৬টায় রাজধানী ইউনাইটেড হাসপাতালে মারা যান। মৃত্যুর সময় তার বয়েস ছিল ৭০ বছর। তিনি স্ত্রী রানী রহমান, দুই  ছেলে অয়ন রহমান ও অতুল রহমান,  মেয়ে তানজিলা রিমঝিম, নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে যান। তিনি নাট্যকার আতাউর রহমানের ছোট ভাই। আতাউর রহমান তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে বলেন, মুজিবুর রহমান দিলু নিউমনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন।  সে জীবন যুদ্ধে যেমন ছিল এক পরাক্রান্ত সৈনিক, তেমনি ছিল এক বর্ণিল জীবনের অধিকারী। তার আত্মার শান্তির জন্য দেশবাসির কাছে দোয়া চেয়েছেন তিনি । বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে তার নামাজে জানাজা শেষে বেলা ৩টায় শিল্পকলা একাডেমিতে কফিন রাখা হলে সেখানে শোকের ছায়া নেমে আসে। এরপর বাদ আসর বনানী কবরস্থানে গার্ড অফ অনার শেষে মজিবুর রহমান দিলুকে সমাহিত করা হয়।

মজিবুর রহমান দিলু ১৯৫২ সালের ৬ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন । ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনে অভিনয় শিল্পী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ১৯৭৬ সাল থেকে বাংলাদেশ টেলিভিশনে নিয়মিত অভিনয় করেন। বিটিভির কালজয়ী  ধারাবাহিক নাটক ‘সংশপ্তক’-এ বড়ো মালু চরিত্রে অভিনয় করে দর্শককের নজরে আসেন।  অনেকের কাছে তিনি মালু নামেই পরিচিত ছিলেন। তার উল্লেখযোগ্য মঞ্চনাটকের মধ্যে রয়েছে ‘আমি গাধা বলছি’, ‘নানা রঙ্গের দিনগুলি’, ‘জনতার রঙ্গশালা’, ‘নীল পানিয়া’, ‘আরেক ফাল্গুন’, ‘ওমা কী তামাশা’ প্রভৃতি। তবে বাংলাদেশ টেলিভিশনের জনপ্রিয় নাটক ‘তথাপি’, ‘সময় অসময়’ ও ‘সংশপ্তক’–এ অভিনয়ের মধ্য দিয়ে তিনি ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন। তিনি ছিলেন ছোটদের সংগঠন 'টোনাটুনি'র প্রধান সমন্বয়কারি। প্রতিষ্ঠা করেন 'ঢাকা ড্রামা' নামে একটি নাট্যগোষ্ঠী। 

স্কুল পড়াকালীন স্বাধিকার আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন তিনি। ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানে যে মিছিলে গুলিতে আসাদ শহীদ হন, সেই মিছিলে ছিলেন দিলুও। ১৯৭০ সালে মেট্রিক পরীক্ষা দিয়েই যুদ্ধে  চলে যান তিনি। ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে বাংলাদেশে ফিরে ঢাকায় সরাসরি রণাঙ্গনে ছিলেন তিনি। নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু ছিলেন সেকেন্ড ইন কমান্ড। সেসময় তিনি ঢাকায় কয়েকটি দুঃসাহসিক অভিযান পরিচালনা করেন।

তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন মানণীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।