আবদুল্লাহ আল-মামুনের জন্মদিনে নানা আয়োজন

13 Jul 2023, 12:51 PM জন্মদিন শেয়ার:
আবদুল্লাহ আল-মামুনের জন্মদিনে নানা আয়োজন

প্রয়াত অভিনেতা, নাট্যকার, নির্দেশক ও চলচ্চিত্র পরিচালক আবদুল্লাহ আল-মামুনের ৮১তম জন্মদিন আজ। আবদুল্লাহ আল-মামুন টেলিভিশন নাটকের একজন প্রবর্তক ছিলেন। বহু কালজয়ী নাটকের নির্মাতা, নির্দেশক এবং নাট্যকার তিনি। চলচ্চিত্র নির্মাণেও তিনি ছিলেন সিদ্ধহস্ত। বাংলা চলচ্চিত্রে তার অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তিনি তার কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ বহু পদক ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।

আবদুল্লাহ আল-মামুনের ৮১তম জন্মদিন উপলক্ষে তার স্মরণে নানা আয়োজন করেছে তার প্রতিষ্ঠিত নাট্যদল ‘থিয়েটার’। আজ ১৩ জুলাই ২০২৩ বিকাল সাড়ে ৪টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সেমিনার কক্ষে আবদুল্লাহ আল-মামুন স্মারক বক্তৃতার আয়োজন করেছে নাট্যদল 'থিয়েটার'। এ আয়োজনে স্মারক বক্তৃতা উপস্থাপন করবেন বিশিষ্ট অভিনয়শিল্পী ও সংসদ সদস্য সুবর্ণা মুস্তাফা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন থিয়েটার সভাপতি ফেরদৌসী মজুমদার। অনুষ্ঠানটি সবার জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে।

এছাড়া সন্ধ্যা ৭টায় জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হবে থিয়েটারের কালজয়ী প্রযোজনা ‘মেরাজ ফকিরের মা’। এটি হবে আবদুল্লাহ আল-মামুন রচিত ও নির্দেশিত এ নাটকের ২০৫তম প্রদর্শনী। ‘মেরাজ ফকিরের মা' নাটকটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন ফেরদৌসী মজুমদার, তোফা হোসেন, রামেন্দু মজুমদার, শেকানুল ইসলাম শাহী, আপন আহসান, ত্রপা মজুমদার, খুরশীদ আলম, জোয়ারদার সাইফ, কল্যাণ চৌধুরী, রাশেদুল আওয়াল শাওন, তানজুম আরা পল্লী, রবিন বসাক প্রমুখ। 

'মেরাজ ফকিরের মা’ নাটকটির মাধ্যমে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে এক শৈল্পিক প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। ভারত ও বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় নাটকটি ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে।

আব্দুল্লাহ আল মামুন ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দের ১৩ জুলাই জামালপুরে আমলা পাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। আব্দুল্লাহ আল মামুনের পৈতৃক নিবাস শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের মলামারি গ্রামে। তার বাবা অধ্যক্ষ আবদুল কুদ্দুস এবং মা ফাতেমা খাতুন। তিনি ১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস বিষয়ে এম এ পাস করেন। আব্দুল্লাহ আল মামুন তার পেশাগত জীবন শুরু করেন বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রযোজক হিসেবে। পরবর্তীসময়ে পরিচালক, ফিল্ম ও ভিডিও ইউনিট [১৯৬৬-১৯৯১], মহাপরিচালক, শিল্পকলা একাডেমী [২০০১] হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

অসংখ্য নাটক রচনায় যেমন নিজের প্রতিভা আর শক্তির পরিচয় দিয়েছেন আব্দুল্লাহ আল-মামুন, তেমনি নিজের অপরিসীম ক্ষমতার প্রমাণ রেখেছেন তার নির্দেশনা ও অভিনয়েও৷ তার রচিত উল্লেখযোগ্য নাটকগুলোর মধ্যে রয়েছে 'সুবচন নির্বাসনে', 'এখন দুঃসময়', 'সেনাপতি', 'এখনও ক্রীতদাস', 'কোকিলারা', 'দ্যাশের মানুষ', 'মেরাজ ফকিরের মা', 'মেহেরজান আরেকবার'৷ 

তিনি নাটকের পাশাপাশি নির্মাণ করেছেন চলচ্চিত্র, টিভি সিরিয়াল। শহীদুল্লাহ কায়সারের উপন্যাস 'সংশপ্তক' নিয়ে ধারাবাহিক নাটকের পরিচালক ও প্রযোজক হিসেবে তিনি পান প্রবাদপ্রতিম খ্যাতি। তার নির্মিত চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে 'সারেং বৌ', 'শখী তুমি কার', 'এখনই সময়', 'জোয়ারভাটা', 'শেষ বিকেলের মেয়ে’। তার পরিচালিত সর্বশেষ চলচ্চিত্র ‘দুই বেয়াইয়ের কীর্তি’।

আবদুল্লাহ আল-মামুন দীর্ঘ রোগভোগের পর ২১ আগস্ট, ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকার বারডেম হাসপাতালে ৬৫ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। আব্দুল্লাহ আল-মামুনের জন্মদিনে আনন্দভুবনের পক্ষ থেকে তাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি।