আবদুল আলীম তার আধ্যাত্মিক ও মরমী গানের জন্য অমর হয়ে থাকবেন

27 Jul 2023, 01:47 PM জন্মদিন শেয়ার:
আবদুল আলীম তার আধ্যাত্মিক ও মরমী গানের জন্য অমর হয়ে থাকবেন

বাংলাদেশের পল্লী গানের প্রবাদপ্রতিম শিল্পী আবদুল আলিম ১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দের ২৭ জুলাই পশ্চিমবঙ্গের মুর্শীদাবাদ জেলার তালিবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

'নাইয়া রে নায়ের বাদাম তুইলা’, ‘সর্বনাশা পদ্মা নদী’, ‘হলুদিয়া পাখী’, ‘দোল দোল দুলনি’, ‘মনে বড়ো আশা ছিল যাবো মদীনায়’সহ অসংখ্য কালজয়ী বাংলা লোকসংগীতের কণ্ঠশিল্পী আবদুল আলীম। অল্প বয়সেই সংগীতচর্চা শুরু করেছিলেন তিনি। ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে আগস্ট মাসে তিনি বেতারে প্রথমবার ‘ও মুর্শিদ পথ দেখাইয়া দাও’ গানটি কণ্ঠে তোলেন।

তিনি বেতার ও টেলিভিশন ছাড়াও অসংখ্য ছবিতে গান করেছেন। এ পর্যন্ত তার প্রায় ৫০০টি গান রেকর্ড করা হয়েছে। 

বাংলা লোকসংগীতের এই প্রবাদপ্রতিম শিল্পী লোকসংগীতকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন। বাল্যকাল থেকেই আবদুল আলীম সংগীতের প্রতি প্রবল অনুরাগী ছিলেন। তিনি অন্যের গাওয়া গান শুনে শুনে শিখে বিভিন্ন পালা-পার্বণে সেগুলো গাইতেন। এভাবে পালা-পার্বণে গান গেয়ে তিনি বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেন।

প্রাথমিক স্কুলে পড়ার সময়ই গ্রামোফোন রেকর্ডে গান শুনে তার ভেতর গান গাওয়ার  আগ্রহ জন্মে। মাত্র তেরো বছর বয়সে ১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দে তার গানের প্রথম রেকর্ড হয়। রেকর্ডকৃত গান দুটি হলো ‘তোর মোস্তফাকে দে না মাগো’ এবং ‘আফতাব আলী বসলো পথে’। এত অল্প বয়সে গান রেকর্ড হওয়া সত্যিই অবিশ্বাস্য ছিল। কিন্তু পরে তিনি হয়ে উঠেছিলেন বাংলার লোকসংগীতের এক প্রবাদপুরুষ।

পরবর্তীকালে তিনি কলকাতায় যান এবং সেখানে আব্বাসউদদীন ও কাজী নজরুল ইসলামের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হয়ে গান করেন। তিনি লোক ও শাস্ত্রীয়সংগীতের ওপর দীক্ষা নিয়েছেন বেদারউদ্দিন আহমদ, ওস্তাদ মোহাম্মদ খসরু, মমতাজ আলী খান, আব্দুল লতিফ, কানাইলাল শীল, আবদুল হালিম চৌধুরী প্রমুখের কাছে।

দেশ বিভাগের পরে আবদুল আলীম ঢাকায় চলে আসেন এবং বেতারের স্টাফ আর্টিস্ট হিসেবে গান গাইতে শুরু করেন। পরে টেলিভিশন সেন্টার চালু হলে সেখানেও সংগীত পরিবেশন করতে থাকেন। এছাড়াও তৎকালীন বাংলাদেশের প্রথম চলচ্চিত্র ‘মুখ ও মুখোশ’সহ বিভিন্ন বাংলা চলচ্চিত্রে আবদুল আলীম গান করেছেন। উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রটি হলো ‘লালন ফকির'। আবদুল আলীম তার আধ্যাত্মিক ও মরমী গানের জন্য অমর হয়ে থাকবেন।

আবদুল আলীম জীবদ্দশায় ও মরণোত্তর বিভিন্ন পুরস্কার লাভ করেন। এর মধ্যে একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, পূর্বাণী চলচ্চিত্র পুরস্কার, বাচসাস চলচ্চিত্র পুরস্কার ও স্বাধীনতা পুরস্কার উল্লেখযোগ্য।

আবদুল আলীমের জন্মদিনে আনন্দভুবন পরিবার তাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছে।