মশা তাড়ানোর সুগন্ধি সাবান তৈরিতে বিনিয়োগ করছেন বিল গেটস

20 Aug 2023, 02:05 PM খবর শেয়ার:
মশা তাড়ানোর সুগন্ধি সাবান তৈরিতে  বিনিয়োগ করছেন বিল গেটস

মশা থেকে দিনব্যাপী সুরক্ষা দেবে, এমন একটি সাবান তৈরির কাজ বেশ জটিল। জেনেভার বিজ্ঞানীরা আপাতত এমন সব সুগন্ধি উপাদান খুঁজে বের করতে চেষ্টা করছেন, যা মশা দূরে রাখে, আবার পারফিউম তৈরিতেও ব্যবহৃত হয়। এই উপাদানগুলোর মধ্যে কোনো কোনোটি সত্যিই এমন, যা মশার একদমই পছন্দ হবে না। আবার কোনো কোনো উপাদান এমনভাবে কাজ করে, যেন মশার মস্তিষ্কে ঘ্রাণের খবরটা না পৌঁছায়।

যেহেতু এর সঙ্গে নতুন সুগন্ধি তৈরিও জড়িত, তাই মানুষের গ্রহণযোগ্যতাও এখানে বড়ো ব্যাপার। শুধু কার্যকর হলেই তো হবে না, ঘ্রাণটা পরিচ্ছন্ন ও তাজা হতে হবে। আমার যেমন চিজ বার্গারের ঘ্রাণ ভালো লাগে। তাই বলে মশা থেকে বাঁচতে আমি নিশ্চয়ই চিজ বার্গারের গন্ধযুক্ত পোশাক পরতে রাজি হব না!

কোন সুগন্ধি কাজের, সেটা যাচাই করার জন্য গবেষকেরা এখন একটা পরীক্ষা করছেন। শত শত মশাভর্তি একটা বদ্ধ খাঁচার ভেতর তাঁরা একজন মানুষের হাত ঢুকিয়ে দেন। হাতে মাখা থাকে সেই ঘ্রাণ, যেটা নিয়ে তাঁরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন। এই ঘ্রাণের বিপরীতে মশা কীভাবে সাড়া দিচ্ছে, লক্ষ্য করার জন্যও একধরনের সেন্সর ব্যবহৃত হয়। মশাগুলো মানুষটির হাতে কামড়ায় কি না, সেটাই দেখার বিষয়। দু’টি মশা কামড়ালেই পরীক্ষাটি ব্যর্থ হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হয়।

এখনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। কিন্তু এরই মধ্যে কিছু অবাক করা ফলও তাঁরা পেয়েছেন। এখন পর্যন্ত সবচেয়ে কার্যকর বলে মনে হচ্ছে কামুদিনী [লিলি অব দ্য ভ্যালি] ফুলের ঘ্রাণকে, যা অনেক পারফিউম তৈরিতেই ব্যবহার করা হয়। মানুষ নিজের গায়ে বা কাপড়ে যেমন ঘ্রাণ পছন্দ করে, এই ঘ্রাণ তার সঙ্গে মানানসই।

পরের ধাপটা সবচেয়ে কঠিন। যার ওপর নির্ভর করছে সাফল্য। ডিএসএম-ফার্মেনিকের মশাবিশেষজ্ঞরা তাঁদের আবিষ্কৃত সেরা সুগন্ধিটি তুলে দেবেন প্রতিষ্ঠানের পারফিউম বিশেষজ্ঞদের হাতে। কীভাবে, কতখানি ব্যবহার করলে ঘ্রাণ সারাদিন স্থায়ী হবে, তা নিয়ে শুরু হবে কর্মযজ্ঞ।

কাজটা সহজ নয়। সুগন্ধি উপাদান খুবই নাজুক জিনিস। হাতে ঘষা কিংবা কাপড় ধোয়ার কাজে ব্যবহৃত হলে ঘ্রাণ দ্রুতই মিলিয়ে যেতে পারে। সারা দিন গায়ের সঙ্গে মিশে থাকবে, এমন ঘ্রাণ তৈরি করতে প্রচুর উদ্ভাবন ও ভিন্ন ভিন্ন উপাদানের জটিল সংমিশ্রণ প্রয়োজন। এবং সব কথার শেষ কথা, দিন শেষে ঘ্রাণটা ভালো হতে হবে, যেন মানুষ প্রতিদিন ব্যবহার করতে আগ্রহী হয়।

আমি আশাবাদী, জেনেভার বিজ্ঞানীরা সফল হবেন। একদিন মশাপ্রবণ এলাকার মানুষেরা কোনো বাড়তি চেষ্টা বা খরচ ছাড়াই মশা থেকে সুরক্ষা পাবে, এই আশায় গেটস ফাউন্ডেশন গবেষণাটিকে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। আমাদের শিশু, আমাদের পরিবারের হাতে নতুন কিছু তুলে দিয়েই আমরা হয়তো তাদের ‘পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ংকর প্রাণী’টির হাত থেকে বাঁচাতে পারব।

সৌজন্যে : banginews.com