জীবন বাবুর গল্প

07 Sep 2023, 01:11 PM জন্মদিন শেয়ার:
জীবন বাবুর গল্প

খ্যাতিমান চলচ্চিত্র, নাট্যাভিনেতা এবং নাট্যকার আবুল হায়াত ১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দের ৭ সেপ্টেম্বর, পশ্চিমবঙ্গের মুর্শীদাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। আবুল হায়াতের বাবা আব্দুস সালাম ছিলেন চট্টগ্রাম রেলওয়ের ওয়াজিউল্লাহ ইন্সটিটিউটের সাধারণ সম্পাদক। সঙ্গত কারণে স্কুলজীবন কাটে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট ও রেলওয়ে উচ্চ বিদ্যালয়ে। সেখান থেকে মেট্রিকুলেশন [বর্তমান এসএসসি] পাস করে চট্টগ্রাম কলেজে ভর্তি হন। তারপর চট্টগ্রাম কলেজ থেকে আইএসসি পাস করে ১৯৬২ খ্রিষ্টাব্দে বুয়েটে ভর্তি হন। এরপর বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট থেকে ১৯৬৭ খ্রিষ্টাব্দে পাস করে ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দেই ঢাকা ওয়াসার প্রকৌশলী পদে যোগদান করেন। আবুল হায়াত ১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দের ‘ইডিপাস নাটকে’ অভিনয়ের মধ্যদিয়ে প্রথমবারের মতো টিভি পর্দায় অভিষেক ঘটে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে নাটক, সিনেমা, বিজ্ঞাপন এই তিন মাধ্যমেই সফলতার সঙ্গে অভিনয় করে আসছেন। জনপ্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদ রচিত অসংখ্য নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। ‘মিসির আলি’ তার একটি স্মরণীয় চরিত্র। এরপর একে একে পাঁচ শতাধিকের অধিক নাটকে অভিনয় করেছেন। তিনি ‘এইসব দিনরাত্রি’, ‘বহুব্রীহি’, ‘অন্য ভুবনের ছেলেটা’, ‘দ্বিতীয় জন্ম’, ‘শেখর’, ‘অয়োময়’, ‘নক্ষত্রের রাত’, ‘আজ রবিবার থেকে জোছনার ফুল’, ‘শুকনো ফুল রঙ্গিন ফুল’, ‘আলো আমার আলো’, ‘নদীর নাম নয়নতারা’, ‘খেলা’, ‘শনিবার রাত ১০টা ৪০ মিনিট’, ‘হাউজফুল’, ‘এফ এন এফ’সহ অসংখ্য দর্শকনন্দিত নাটকে অভিনয় করে নিজেকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন। নাট্যজগতের পাশাপাশি চলচ্চিত্রজগতেও নিজেকে করেছেন সমৃদ্ধ। ১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দে ঋত্বিক ঘটকের ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ ছবিতে প্রথম অভিনয় করেন। একই বছর ‘অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী’-তেও অভিনয় করেন। তবে গত শতকের নয়ের দশকে রূপালি পর্দায় নিয়মিত হন। ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ‘প্রাণের চেয়ে প্রিয়’, ‘প্রেমের তাজমহল’ থেকে ‘শঙ্খনীল কারাগার’, ‘আগুনের পরশমনি’, ‘জয়যাত্রা’, ‘দারুচিনি দ্বীপ’, ‘থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার’, ‘অজ্ঞাতনামা’, ‘ফাগুন হাওয়ায়’সহ বহুসংখ্যক ছবিতে অভিনয় করেছেন। অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি মাঝে মাঝে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় কলাম লিখে থাকেন। প্রথম আলোতে তার কলামের নাম ‘এসো নীপবনে’। ১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দের বইমেলায় তার প্রথম উপন্যাস প্রকাশিত হয়। উপন্যাসটির নাম ছিল ‘আপ্লুত মরু’। এরপর বের হয়, ‘নির্ঝর সন্নিকট’, ‘এসো নীপোবনে’ [তিন পর্ব], ‘অচেনা তারা’, ‘জীবন খাতার ফুট নোট’ [দুই পর্ব], ‘ঢাকামি’, ‘মিতুর গল্প’ ইত্যাদি।

অভিনেতা ও আবৃত্তিকার গোলাম মুস্তাফা তাঁকে ডাকতেন জীবন বাবু বলে। আবুল হায়াত ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে ‘দারুচিনি দ্বীপ’ চলচ্চিত্রে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং দুইবার মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার বিজয়ী হন। উল্লেখ্য, তিনি অভিনেত্রী বিপাশা হায়াত এবং নাতাশা হায়াতের পিতা। এই গুণী শিল্পীর জন্মদিন আজ। তার জন্মদিনে আনন্দভুবনের পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা