সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের দেশব্যাপী কর্মসূচি ‘আমার দেশ সম্প্রীতির বাংলাদেশ’

17 Sep 2023, 03:29 PM খবর শেয়ার:
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের দেশব্যাপী কর্মসূচি  ‘আমার দেশ সম্প্রীতির বাংলাদেশ’

জাতীয় সংসদ নির্বাচন আসন্ন।নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারীরা তৎপর হয়ে উঠেছে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিশেষভাবে তৎপর হয়ে উঠেছে একাত্তরের পরাজিত শক্তি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী উগ্র মৌলবাদী গোষ্ঠী।

এই বাস্তবতায় সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা পৌঁছে দিতে নানারকম কর্মসূচি গ্রহণ করেছে সংস্কৃতিকর্মীরা। সে লক্ষ্যে ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ থেকে আমার দেশ সম্প্রীতির বাংলাদেশ’ শীর্ষক কর্মসূচির সূচনা করেছে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট। ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকায়  কর্মসূচির সূচনা করা হয় কেন্দ্রীয় শহিদমিনারের পাদদেশে। শুরুতে ছিল আলোচনা পর্ব। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি, লেখক ও গবেষক গোলাম কুদ্দুছের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য উপস্থাপন করেন জোটের সাধারণ সম্পাদক আবৃত্তিশিল্পী মো. আহ্কাম উল্লাহ্। অন্য বক্তাদের মধ্যে ছিলেন কবি মুহাম্মদ সামাদনাট্যজন ঝুনা চৌধুরীপথনাটক পরিষদের সভাপতি মিজানুর রহমাননৃত্যশিল্পী সংস্থার সভাপতি মিনু হকযাত্রাশিল্প উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি মিলন কান্তি দেবাংলাদেশ গণসংগীত সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী সুইটবাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইকবাল খোরশেদ।

এদিন ঢাকা ছাড়াও সাতক্ষীরা, সিলেট, কিশোরগঞ্জ, যশোর, রাজশাহী, কুমিল্লা-সহ দশটি জেলায় কর্মসূচি পালিত হয়। ক্রমে সারাদেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় ধারাবাহিকভাবে একই কর্মসূচি পালন করা হবে।

নতুন  কর্মসূচির প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বক্তারা বলেনবাংলাদেশ রাষ্ট্রের ভিত্তি হলো সংস্কৃতি আর এর কাঠামো রাজনৈতিক। দুটোরই মূল চাওয়া অসাম্প্রদায়িক চেতনায় শোষণ মুক্ত গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার মধ্যদিয়ে মূলত মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকেই হত্যা করা হয়। নতুন করে পাকিস্তানি ভাবাদর্শ প্রতিষ্ঠার চক্রান্ত শুরু হয়। সেই একই অপশক্তি এখনো সক্রিয় আছে। বিশেষ করে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেছে তারা।

মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেওয়া কিছু দেশও নানা ষড়যন্ত্রে নেমে গেছে। উগ্রবাদীদের তারা একধরনের মদদ দিচ্ছে। যে জামায়াতে ইসলামের শীর্ষ নেতারা মানবতা বিরোধী অপরাধ করায় ফাঁসিতে ঝুলেছেসেই দলের সঙ্গে এখন মানবাধিকারের কথা বলা দেশগুলো দিব্যি বৈঠক করছে। এ অবস্থায় সার্বভৌমত্ব রক্ষায় মানুষকে জাগিয়ে তোলার বিকল্প নেই। সংস্কৃতির শক্তিকে হাতিয়ার করেই সারাদেশে সংস্কৃতিকর্মীরা মাঠে থাকবে বলে জানানো হয় সূচনাপর্বের আয়োজনে।

দ্বিতীয় পর্বে ছিল সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। চাই সম্প্রীতির বাংলাদেশ’ শীর্ষক সংগীত ও নৃত্যানুষ্ঠানে অংশ নেন একদল শিল্পী। গ্রন্থনায় ছিলেন গোলাম কুদ্দুছ। সংগীত পরিচালনায় আবিদা রহমান সেতু। নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন ওয়ার্দা রিহাব।

মো. আহ্কাম উল্লাহর গ্রন্থনা ও নির্দেশনায় ছিল আবৃত্তি প্রযোজনা সংস্কৃতির বাংলাদেশ এতে অংশ নেন মো. আহকাম উল্লাহ্, আজাহারুল হক আজাদ, মাসুদুজ্জামান ও রাশেদ হাসান।

সবশেষে ছিল নাট্যায়োজন। আবুল কালাম আজাদের রচনা ও দেবাশীষ ঘোষের নির্দেশনায় পরিবেশিত হয় নাটক ঠিকানা’। এভাবে শিল্পের নানা মাধ্যমে সম্প্রীতির বার্তা দেন শিল্পীরা। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ঊর্ধ্বে তুলে ধরার আহ্বান জানান তারা।

আনন্দভুবন প্রতিবেদন