শুভ জন্মদিন রফিকুন নবী

28 Nov 2023, 01:25 PM খবর শেয়ার:
শুভ জন্মদিন রফিকুন নবী

 

প্রবাদপ্রতীম চিত্রশিল্পীকার্টুনিস্ট রফিকুন নবী ১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ নভেম্বর রাজশাহী বিভাগের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা রশীদুন নবী ছিলেন একজন পুলিশ কর্মকর্তা। মা আনোয়ারা বেগম ছিলেন জমিদার পরিবারের সন্তান। তার স্ত্রীর নাম নাজমা বেগম। 'টোকাইকার্টুন চরিত্রটি রফিকুন নবীর অনবদ্য সৃষ্টি। ১৯৭৮ খ্রিষ্টাব্দ থেকে টোকাই কার্টুন স্ট্রিপ হিসেবে সাপ্তাহিক বিচিত্রা পত্রিকায় নিয়মিত প্রকাশিত হয়েছে। এরপর ২০০০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে সাপ্তাহিক ২০০০ পত্রিকায় টোকাই কার্টুন নিয়মিত প্রকাশিত হয়।

পুলিশ অফিসার বাবার বদলির চাকরির সুবাদে রফিকুন নবীর শৈশব ও কৈশোর কেটেছে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ৷ এরপর পঞ্চাশের দশকের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকায় স্থায়ী হন রফিকুন নবীর পরিবার। পুরান ঢাকাতে কৈশোর ও যৌবনের বেশি সময় কাটে রফিকুন নবীর৷ পুরান ঢাকার পোগোজ হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক পড়াশোনা শেষ করে ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকার সরকারি আর্ট কলেজে ভর্তি হন তিনি৷ এখানে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীনকামরুল হাসানসহ খ্যাতিমান ব্যক্তিদের সান্নিধ্যে থেকে পড়াশোনা করার সুযোগ হয় তার৷ আর্ট কলেজে প্রথম বর্ষে পড়াশোনা করার সময় নিজের আঁকা একটি ছবি ১৫ টাকায় প্রথম বিক্রি করেন তিনি৷ স্থানীয় সংবাদপত্রে রেখাচিত্র এঁকে এবং বুক কভার ইলাস্ট্রেশন করে পরিচিতি লাভ করেন দ্বিতীয় বর্ষে পড়ার সময়েই৷ ১৯৬২ খ্রিষ্টাব্দে এশিয়া ফাউন্ডেশনের বৃত্তি লাভ করেন তিনি৷ রফিকুন নবী ১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দে স্নাতক পাশ করেন৷

পড়াশোনা শেষ করে রফিকুন নবী সে সময়ে ঢাকার প্রথম সারির পত্রিকাগুলিতে নিয়মিত কার্টুন আঁকতে শুরু করেন। ১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দের ৩ আগস্ট ঢাকা আর্ট কলেজের শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু হয় তার ৷

 ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে মুক্তিযুদ্ধকালীন ঢাকায় থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অর্থকাপড় ও খাদ্য সংগ্রহ করেছিলেন তিনি। ১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দে গ্রিক সরকারের পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন বৃত্তি নিয়ে তিনি ভর্তি হন গ্রিসের এথেন্স স্কুল অব ফাইন আর্ট-এ৷ সেখানে পড়াশোনা করেন প্রিন্ট মেকিং-এর ওপর৷ এরপর ১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দে দেশে ফিরে আসেন তিনি৷ শিক্ষক থেকে ক্রমান্বয়ে প্রভাষকসহকারী অধ্যাপকসহযোগী অধ্যাপকের পদে পদোন্নতি পান তিনি ৷ রফিকুন নবী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট অফ ফাইন আর্টস-এর ড্রইং ও পেইন্টিং বিভাগে প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন ১৯৮৮ থেকে ১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত। ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তিনি ছিলেন একই ইন্সটিটিউটের পরিচালক। বর্তমানে ফ্রিল্যান্স আর্টিস্ট হিসাবে কাজ করছেন তিনি।

রফিকুন নবী শিল্পকলায় অবদানের জন্য ১৯৯৩ খ্রিষ্টাব্দে একুশে পদক লাভ করেন। এছাড়া তিনি চারুকলায় জাতীয় সম্মাননা শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কারঅগ্রণী ব্যাংক সাহিত্য পুরস্কারবুক-কভার ডিজাইনের জন্য ১৩ বার ন্যাশনাল একাডেমি পুরস্কারসহ বহু পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেন৷ ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে তার আঁকা 'খরাশীর্ষক একটি ছবির জন্য ৮০টি দেশের ৩০০ জন চিত্রশিল্পীর মধ্যে 'এক্সিলেন্ট আর্টিস্টস অব দ্য ওয়ার্ল্ডহিসেবে মনোনীত হন৷

এই গুণী শিল্পীর জন্মদিনে আনন্দভুবনের পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।