ফাল্গুনে ভালোবাসার সাজ

13 Feb 2024, 01:34 PM রূপচর্চা শেয়ার:
ফাল্গুনে ভালোবাসার সাজ

বাঙালি বসন্তকে ভালোবেসে বরণ করে নিতে পুরোপুরি প্রস্তুত। যেহেতু ফাল্গুন আর ভালোবাসাদিবস পাশাপাশি তাই উৎসবের আনন্দটাও বেশি। দুই মহাউৎসব ঘিরে তো বাঙালির এবার আনন্দ আর আয়োজনের শেষ নেই। হাতে আর মাত্র কয়েকটা দিন। যেহেতু এই দুই দিনের সাজে খুব একটা পার্থক্য নেই তাই একসাথেই আপনার জন্য থাকছে ফাল্গুন আর ভালোবাসাদিবসের সাজগোজের মোটামুটি কিছু ধারণা।

একটা সময় বসন্তের প্রথম দিনে মেয়েদের পরনেই শুধু দেখা যেত হলুদ বা বাসন্তী পোশাক-ভালোবাসা উপলক্ষে লাল রঙের প্রাধান্যও কিছুটা থাকত। আর তাঁত বা টাঙ্গাইল শাড়ি পরার চলই ছিল বেশি। এখন সবধরনের পোশাকও পরা হয়। যেহেতু শীতের আমেজ রয়েছে সাজগোজ নিয়ে তাই তেমন কোনো চিন্তা নেই।

নারীর সাজ

ফাল্গুন আর ভ্যালেন্টাইনস ডে’র দুয়েকদিন আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করুন। আইব্রোটা গ্রেডিং করে নিন। ফেসিয়ালটা করে নিতে পারেন দুয়েকদিন আগে। প্রয়োজন মনে হলে প্যাডিকিওর, মেনিকিওরটাও করিয়ে নিতে পারেন। সব সময় মনে রাখবেন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাই সৌন্দর্যের মূল উৎস।

এই দিনগুলোর সাজ সাধারণত দুই ভাগে ভাগ করা যায়। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এবং সন্ধ্যা থেকে রাত এই দুই ভাগে দু’ধরনের মেকআপ নিতে হবে।

সকাল থেকে সন্ধ্যার মেকআপ হালকা হলেই ভালো। এই সময় স্টে মেকআপ অর্থাৎ দীর্ঘসময় স্থায়ী হয় তেমন মেকআপ করতে হবে। এখন যেহেতু শীতকাল তাই মেকআপের আগে একটু ময়েশ্চারাইজার বা প্রাইমার দিতে হবে। এতে করে মেকআপ সরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। লাইট ফাউন্ডেশন দেওয়ার পরে ফেসপাউডার লাগিয়ে কনট্যুরিং করে নিলেই হয়ে যাবে।

সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত সময়ে ভারি মেকআপ নেওয়া যেতে পারে অনায়াসে। সেক্ষেত্রেও প্রাইমার বা ময়েশ্চারাইজারের পর ফাউন্ডেশন অ্যাপ্লাই করে নিতে হবে। চোখের নিচে কালো দাগ থাকলে কনসিলার লাগিয়ে নিতে হবে। এরপর প্যানকেক ব্যবহার করা যেতে পারে স্কিন টোনের সঙ্গে মিলিয়ে। অথবা প্যানকেক ব্যবহার করতে না চাইলে কমপ্যাক্ট পাউডার ভারি করে লাগাতে হবে।

ট্রেন্ডি মেকআপের ক্ষেত্রে টি-জোনে শাইনিং মেকআপ দেখা যায়। এজন্য টি-জোন এবং ব্লাশন বোনের দু’পাশে শাইনার পাউডার ব্রাশ করতে হবে। এছাড়া শিমার পাউডার ব্যবহার করলে দেখতে আরো উজ্জ্বল লাগবে। আর কনট্যুরিং ঠিকমতো করে নিলে অল্প মেকআপেও অনেক বেশি গ্ল্যামারাস মনে হয়। চোখের নিচের পাতায় কাজলের হালকা রেখা টানুন, আর ওপরের পাতায় আইলাইনার। চিকন করে শুরু করে শেষের দিকে সামান্য মোটা করে টেনে নিন আইলাইনারের রেখা। ঘন করে মাশকারা লাগান, কমপক্ষে দু’বার।

ফাল্গুনে সাধারণত হলুদ বা বাসন্তী রঙের প্রাধান্য থাকে। আর ভালোবাসাদিবসে লাল রঙের পোশাকের প্রাধান্য থাকে বেশি। তবে এই দুই রঙের সাথেই ঠোঁটে লিপস্টিকের ক্ষেত্রেও লালের ব্যবহার বেশি দেখা যায়। এক্ষেত্রে পছন্দ অনুযায়ী রেড কালার এবং ন্যুড কালার মিলিয়ে র‌্যাডিস লিপস্টিক দেওয়া যেতে পারে। এতে করে ঠোঁটে আলাদা সৌন্দর্য ফুটে ওঠে। তাছাড়া এখন মেরুন, খয়েরি, পার্পল লিপস্টিকগুলোও বেশ চলছে।

গয়নার ক্ষেত্রেও একটু বিশেষ নজর দিতে হবে। শাড়ির সঙ্গে যেকোনো গয়নাই মানিয়ে যায়। পাশ্চাত্য পোশাকের সঙ্গে হালকা গয়না ভালো লাগে। ফুলের ব্যবহার বেশি করলে গয়না কম ব্যবহার করতে হবে। কানের দুল বড়ো হলে গলায় কিছু না পরাই ভালো। কানে ছোটো টপ পরলে সেক্ষেত্রে চোকার গলায় ভালো লাগবে।

চুল

সৌন্দর্যের প্রথম কথাই হচ্ছে সুন্দর চুল। ব্যক্তিত্ব পরিবর্তনে চুলের স্টাইল ব্যাপক ভূমিকা রাখে। হেয়ার স্টাইল পরিবর্তন করে একজনের চেহারা মুহূর্তের মধ্যে পাল্টে দেওয়া যায়। সব স্টাইলই যে সবাইকে মানাবে এটা ঠিক নয়। এটি নির্ভর করে ব্যক্তির বয়স, চেহারার ধরন, পেশা, ব্যক্তিত্ব, সামাজিক অবস্থান এসব কিছুর ওপর। যখন কোনো স্টাইলের পর আপনার লুকে যে পরিবর্তন আসবে, সেটা যদি ইতিবাচক হয় তাহলে স্বাভাবিকভাবেই আপনার আত্মবিশ্বাস অনেকখানি বেড়ে যাবে। তাই চিন্তা-ভাবনা করে সিলেক্ট করুন আপনার জন্য পারফেক্ট হেয়ার স্টাইল। প্রয়োজনে হেয়ার এক্সপার্টের কনসালটেন্সি গ্রহণ করুন।

শাড়ির সঙ্গে চুল খোলা রাখা বা খোঁপা করে নেওয়া যায়। খোলা চুলে ওয়েভ কার্ল, স্পাইরাল করে নিতে পারেন। চাইলে কপাল ঘেঁষে চিকন বেণী করে নিতে পারেন। যারা শাড়ি পরবেন, তারা খোঁপা করে নিতে পারেন। বাড়িতে বসে সহজে খোঁপা করতে চাইলে মাঝখানে সিঁথি করে হাতখোঁপা করে নিলেই হয়ে যাবে। হরেক রকম চুলের কাঁটা গুঁজে খোঁপায় গড়ে তুলুন নতুন ছন্দ। চাইলে তাজা ফুল জড়াতে পারেন চুলে। পাশ্চাত্য ঢঙের পোশাকের ক্ষেত্রে চুলে নানারকম পনিটেল মানিয়ে যায়। তাছাড়া সামনে চুল কিছু স্পাইরাল করে পেছনে ভলিউম করে নিয়ে চুল খোলা রাখলেও ভালো লাগবে। খেয়াল রাখবেন, চুল যেন সবসময় পরিষ্কার ও টিপটপ দেখায়। ব্যাগে পাঞ্চ ক্লিপ ও ব্রাশ রাখবেন।

পুরুষদের সাজসজ্জা

পুরুষদের সাজসজ্জার প্রথম কথাই হচ্ছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা। নিজেকে সতেজ ও সুরভিত রাখতে ব্যবহার করতে পারেন লোশন, ডিওডেরান্ট, বডি স্প্রে, কিংবা পারফিউম। এছাড়া পুরুষদের রূপচর্চা ও সাজসজ্জা অনেকটাই সেভ করার সঙ্গে সম্পৃক্ত। ভালো কোনো ব্যান্ডের শেভিং জেল ব্যবহার করে শেভ করে নিন। শেভিংয়ের পর আফটার শেভ লোশন ব্যবহার করুন। ভালো কোনো ব্র্যান্ডের বডি সোপ দ্বারা শাওয়ার করে নিন। বডি স্প্রে বা ডিওডেরান্ট ব্যবহার করুন। 

লেখা : ফাতেমা ইয়াসমিন