বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী। তাকে নিয়ে আনন্দভুবনের [২১ বর্ষ ২৪] ১-১৫ মে, ২০১৭ সংখ্যায় প্রচ্ছদ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। শিরেনাম ছিল : ‘কোটি দর্শক স্পর্শ করলেন কণার দিল’। এতে তার সম্পর্কে লেখা হয়েছে :
বর্তমান সময়ে গানে এসেছে নতুন ধারা। দর্শক-শ্রোতাদের গানের ভুবনে ফিরিয়ে আনতে শিল্পীরা নতুন কৌশল অবলম্বন করছেন। এখন শুধু গানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছেন না শিল্পীরা। গানকে সুন্দরভাবে দর্শক-শ্রোতাদের কাছে পৌঁছে দিতে গানের সঙ্গে তৈরি হচ্ছে অসাধারণ মিউজিক ভিডিও। বর্তমান সময়ে এই পদ্ধতিতে যারা আলোচিত হয়েছেন তাদেরই একজন কণা...
লেখা : শেখ সেলিম
চলতি সময়ে
দিলশাদ নাহার কণা একাধারে একজন সংগীতশিল্পী ও মডেল। নিজের প্রথম একক অ্যালবাম ‘জ্যামিতিক ভালোবাসা’র টাইটেল গানটির মাধ্যমেই কণ্ঠশিল্পী হিসেবে আলোচনায় এসেছিলেন এ গায়িকা। এরপর আরো কিছু একক অ্যালবামের মাধ্যমে হিট সব গান উপহার দিয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি মেহরাবের সঙ্গে নারীদিবসের একটি গান গাইলেন কণা। ৮ মার্চ, বিশ্ব নারীদিবস উপলক্ষে নারীদের উজ্জীবিত করতে গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী কণা। তার সঙ্গে কণ্ঠ দিয়েছেন ক্লোজআপ ওয়ান খ্যাত শিল্পী মেহরাব।
‘স্বপ্ন নয় সত্যি এ হাসি বিজয়ের, গল্প নয় কোনো এ বিজয় আমাদেরÑ এমন কথায় গানটি লিখেছেন তরুণ গীতিকার এন আই বুলবুল। এটির সুর-সংগীত করেছেন রেজওয়ান শেখ। বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আরটিভির প্রযোজনায় গানটি তৈরি করা হয়েছে।
‘রেশমি চুড়ি’, ‘ধিমতানা’ গানগুলো দিয়ে অনেক আগেই শ্রোতাদের মন জয় করে নিয়েছেন কণা। পরবর্তীসময়ে ‘দিল দিল দিল’, ‘ও ডিজে’-এর মতো কণার গাওয়া একের পর এক সিনেমার গান শ্রোতাপ্রিয়তা লাভ করেছে।
একক গানের পাশাপাশি একাধিক নাটকের গানেও কণ্ঠ দিয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এই গায়িকা। এছাড়া এবার বৈশাখে কণার একটি গান প্রকাশিত হয়েছে। বৈশাখের আগের দিন রাতে ইউটিউব চ্যানেলে ‘বাংলা আমার প্রাণ’ শিরোনামে নতুন গানটি রিলিজ হয়। এটা বৈশাখের গান ঠিক নয়, তবে দেশাত্মবোধক বলা যায়, গানটি প্রকাশের পর বেশ ভালো সাড়া পাচ্ছেন তিনি। আরো বেশ কিছু নাটকের গান প্রচারের অপেক্ষায় রয়েছে।
তিনি বসগিরি [২০১৬] চলচ্চিত্রের ‘দিল দিল দিল’, পোড়ামন ২ [২০১৮] চলচ্চিত্রের ‘ওহে শ্যাম’, এবং বিশ্বসুন্দরী [২০১৯] চলচ্চিত্রের ‘তুই কি আমার হবি রে’ গানের জন্য তিনবার সেরা গায়িকা বিভাগে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার অর্জন করেছেন। ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে জতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়ে বেশ উৎফুল্ল জনপ্রিয় এই কণ্ঠশিল্পী। এছাড়া আরো বেশকিছু পুরস্কার পেয়েছেন নন্দিত এই কণ্ঠশিল্পী।
মাত্র চার বছর বয়সেই গানের সঙ্গে পরিচিতি ঘটে তার। ‘আমরা সবাই রাজা আমাদের এই রাজার রাজত্বে’ গানটি শেখার মধ্য দিয়েই কণার গানের ভুবনে পদযাত্রা। আর আনুষ্ঠানিকভাবে তার কণ্ঠে গাওয়া প্রথম গানটি ছিল ‘গ্রামছাড়া ওই রাঙা মাটির পথ’। মাত্র পাঁচ বছর বয়সে প্রথম একটি গানের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন তিনি।
ইমন সাহার মাধ্যমে একটি বিজ্ঞাপনের জিঙ্গেলে কণ্ঠ দেওয়ার সুযোগ পান কণা। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। এপর্যন্ত প্রায় ৫০০ জিঙ্গেলে কণ্ঠ দিয়েছেন। ‘আভি তো লামহে’ শিরোনামে একটি হিন্দি বিজ্ঞাপনেও কণ্ঠ দিয়েছেন কণা। বাংলা ও হিন্দি ছাড়াও সিংহলি এবং আরবি ভাষায়ও জিঙ্গেল করেছেন।
১৫ এপ্রিল ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন কণা। শৈশব কাটে তার মা-বাবা এক ভাই এবং এক বোনের সঙ্গে। কণার ভালো নাম দিলশাদ নাহার কণা। মিরপুরের টাইনি টটস স্কুলে ভর্তি হওয়ার মধ্য দিয়েই কণার স্কুলজীবনের হাতেখড়ি।
কণার ক্যারিয়ারের বয়স প্রায় দুই যুগ। তার একক অ্যালবামের সংখ্যা কম হলেও মিক্সড অ্যালবামের সংখ্যা অনেক। সিনেমায় প্লেব্যাকের পাশাপাশি বিজ্ঞাপনচিত্রে জিঙ্গেল দিয়ে নিজের অবস্থান দৃঢ় করেছেন। দিলশাদ নাহার কণা ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ২১ এপ্রিল বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। হ
লেখা : শহিদুল ইসলাম এমেল