মেয়েরা সংসার করেও অনেক কিছু করতে পারে

09 Feb 2021, 02:16 PM রঙ্গশালা শেয়ার:
মেয়েরা সংসার করেও অনেক কিছু করতে পারে

সামছি আরা সায়কা। পদাতিক নাট্য সংসদের হয়ে কাজ করছেন দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে। ২০১৬ সালে এই দল থেকে মঞ্চে আসে তার একক অভিনীত নাটক ‘গহনযাত্রা’। গত মাসে হয়ে গেল নাটকটির ৫০তম মঞ্চায়ন। সম্প্রতি মঞ্চে আসা অনুরাগ থিয়েটারের ‘অবজেকশন ওভার রুলড’ নাটকে মেহেরে যাবানি চরিত্রে অভিনয় করেও বেশ প্রশংসিত হচ্ছেন তিনি। এসব বিষয় নিয়ে আনন্দভুবনের সঙ্গে কথা বলেছেন সায়কা...


আনন্দভুবন : আপনাদের দলের নতুন কাজ নিয়ে বলুন-

সায়কা : করোনাকালীন সব দলের কাজই বন্ধ ছিল। আমাদের দলের কাজও বন্ধ ছিল। এখন অবশ্য দলগুলো সক্রিয় হচ্ছে। নাটকও মঞ্চায়ন হচ্ছে। আমাদের দলে বর্তমানে নতুন একটি নাটক হচ্ছে। নাটকের নাম ‘পাকে বিপাকে’। এখানে নতুনরা অভিনয় করছে। এছাড়া ২১ জানুয়ারি পদাতিক নাট্য সংসদ ৪৪ বছরে পদার্পণ করে। এ উপলক্ষে ২৩ জানুয়ারি শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় পদাতিক নাট্য সংসদের দুটি নাটক ‘গহনযাত্রা’ ও ‘ম্যাকবেথ’-এর ৫০ তম মঞ্চায়ন হয়েছে। দুটি নাটকেই আমি অভিনয় করেছি। এর মধ্যে ‘গহনযাত্রা’ আমার একক অভিনীত নাটক।

আনন্দভুবন : একক অভিনয়ের নাটকের ৫০তম প্রদর্শনীর অনুভূতি কেমন ?

সায়কা : একক অভিনয়টা অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং। আর আমার স্ক্রিপ্টটাও অনেক কঠিন। এর ৫০টি প্রদর্শনী করেছি। নিজের একক অভিনয়ের একটি নাটকের ৫০তম মঞ্চায়ন হলো এটা আমার জন্য অনেক আনন্দের ছিল। প্রত্যেক মঞ্চাভিনেত্রীর একটা স্বপ্ন থাকে আর সেটি হলো একক অভিনয় করা। আমারও অনেক দিনের ইচ্ছে ছিল এটি। ইচ্ছা আছে শরীরে যত দিন শক্তি থাকবে, নাটকটি করতে থাকব। অন্ততপক্ষে শততম রজনী যেন পার হয়।

আনন্দভুবন : আপনার অভিনীত নতুন নাটক নিয়ে বলুন-

সায়কা : নবীন দল অনুরাগ থিয়েটারের নতুন একটা নাটকে কাজ করেছি। নাটকের নাম ‘অবজেকশন ওভার রুল্ড’। এই প্রথম পদাতিক নাট্য সংসদ থেকে বের হয়ে আরেকটা দলের হয়ে কাজ করা। ইরানের একটা মেয়ের ঘটনা নিয়ে নাটক। পৃথিবীর সব জায়গায় যেরকম নারী নির্যাতন চলছে, অবিচার চলছে সেসব ঘটনাগুলোর সঙ্গে নাটকের গল্পটা অনেকাংশে মিলে যায়। মেহেরে যাবানি যে কিনা ১০ বছর বয়সে একটা ট্রাপে পড়ে, তাকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। আসলে তার কোনো দোষ ছিল না। নাটকটির জন্য অনেক প্রশংসা পাচ্ছি। যতগুলো শো হয়েছে সবগুলোয় হাউজফুল দর্শক ছিল।

আনন্দভুবন : নিজের দলের বাইরে কাজ করার অভিজ্ঞতাটা কেমন ছিল ?

সায়কা : করোনাকালীন ঘরের মধ্যে থেকেই আমরা অনলাইনে নাটকটির মহড়া করেছি। যদিও করোনার আগেও এক মাসের মতো কাজ করেছি। তবে কাজ করতে গিয়ে অনেক পার্থক্যই পেয়েছি আমাদের দলের সঙ্গে। কারণ, ওদের ডিরেক্টর নতুন, দলের সদস্যরা নতুন, আর এই দলটিও নতুন। অনেক বেশি রিস্কের মধ্যে কাজটা করেছি।

আনন্দভুবন : কতদিন হলো থিয়েটার করছেন ?

সায়কা : আমি ৮৬ সাল থেকে থিয়েটার করছি। শুরু করেছিলাম পদাতিক দিয়ে এখনো এই দলেই আছি। দলে যুক্ত হওয়ার তিন বছর পরে ‘চন্দ্রাবতি’ নাটকের মাধ্যমে আমার পথচলা শুরু। এই নাটকে আমি কেন্দ্রীয় চরিত্রে কাজ করেছি। তারপর থেকে দলের প্রায় সব নাটকেই অভিনয় করেছি।

আনন্দভুবন : মঞ্চে অভিনয় বাদে আর কিছু করছেন ?

সায়কা : ‘পরিচয়’ নামে একটি পথনাটক লিখেছি এবং সেটির নির্দেশনাও দিয়েছি। আমাদের দলে কাজী রফিক ভাইয়ের ‘তারামন বিবি’ পথনাটকটি অনেকদিন বন্ধ ছিল, সেটা আবার নতুন করে নির্দেশনা দিয়েছি আমি। কিছুদিন আগে সেলিম আল দীনের মৃত্যুবার্ষিকীতে ‘যৈবতী কন্যার মন’ নাটকের আংশিক নির্দেশনা দিয়েছি।

আনন্দভুবন : আপনি তো নৃত্যের চর্চাও করেন ?

সায়কা : আমি থিয়েটারে আসার আগে থেকেই মঞ্চের কাজের সঙ্গে যুক্ত। বুলবুল ললিত কলা একাডেমিতে নাচ শিখেছি। বিটিভিতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নাচ করতাম, বিটিভির নাটকেও অভিনয় করেছি। কিন্তু একটা পর্যায়ে যখন বিয়ে করে সংসার হয়ে যায়, তখন আর মিডিয়াতে সময় দিতে পারিনি। 

সাক্ষাৎকার : নিথর মাহবুব