প্রতিটি নতুন প্রভাত আমার কাছে নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে ধরা দেয় -রুবাইয়াৎ অদিতি

09 Feb 2021, 02:21 PM সংবাদ উপস্থাপক শেয়ার:
প্রতিটি নতুন প্রভাত আমার কাছে নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে ধরা দেয় -রুবাইয়াৎ অদিতি

প্রভাতের শুরুটা হওয়া চাই একেবারেই অন্যরকম। নতুন কোনো স্বপ্ন নিয়ে ছুটে চলা। থাকে নতুন কোনো ভালো লাগা, ভালোবাসা কিংবা নতুন স্বপ্ন। এসব বুঝে সংবাদগুলো দর্শকের সামনে বিশ^াসযোগ্য করে তোলেন একজন সংবাদ উপস্থাপক। তেমন একজন সংবাদ উপস্থাপক ৭১ টেলিভিশনের রুবাইয়াৎ অদিতি। স্বতন্ত্র ব্যক্তিত্বের কারণে দর্শকপ্রিয়তাও পেয়েছেন তিনি। আনন্দভুনের পাঠকের জন্য সংবাদ উপস্থাপক রুবাইয়াৎ অদিতির একান্ত আলাপচারিতা...


আনন্দভুবন : মিডিয়ায় পথচলা নিয়ে বলুন-

রুবাইয়াৎ অদিতি- বাংলাদেশের প্রথম রিয়েলিটি শো এটিএন বাংলার ‘তারকাদের তারকা’ শীর্ষক আয়োজনে শিশুশিল্পী হিসেবে অংশ নিয়েছিলাম। সেখানে সেরা দশজনের একজন আমিও ছিলাম। পরবর্তীসময়ে আর ওখানে থিতু হইনি। এরপর এইচএসসি শেষ করে ঢাকায় চলে আসি। ইস্ট ওয়েস্টে পড়াকালীন কাকতালীয়ভাবে সুযোগ পেয়ে গেলাম মাছরাঙা টেলিভিশনে। সেখানে বেশ কয়েক বছর ‘রাঙা সকাল’ অনুষ্ঠান এবং এর বাইরে প্রোমো ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্ব সামলেছি। সেখানে থেকে পরে জনপ্রিয় রেডিও এফএম-এ যোগ দিই। সেখানে থাকা অবস্থায় পার্টটাইম উপস্থাপনার চিন্তায় ৭১-এ যোগাযোগ করি। এখানেও একইভাবে অডিশন দিই এবং সিলেক্ট হই। মোজাম্মেল বাবু ভাই ডেকে নেন, এবং ফুলটাইম করার জন্য বলেন। সবদিক ভেবে শুরু করি ৭১-এ আমার নতুন চ্যালেঞ্জ। এখনো আছি। বেশ ভালোই আছি।

আনন্দভুবন : পরিবার এক্ষেত্রে কতটা সাপোর্ট করেছে ?

রুবাইয়াৎ অদিতি : পুরোপুরি। উদার আর সংস্কৃতিমনা একটি পরিবারে আমার বেড়ে ওঠা। বাবা ফরিদ আহমদ দুলাল, কবি হিসেবে তার বেশ নামডাক। অপরদিকে মা কুমকুম সরকার ময়মনসিংহ ক্যান্টমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের বাংলার শিক্ষক ছিলেন। আমাদের বাড়িতে বা জেলা শহরে প্রায়ই সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানগুলোতে লোকসমাগম নিয়মিত ছিল। আমি এ পরিবেশ দেখতে দেখতে বেড়ে উঠেছি। বলতে পারেন তখন থেকেই মিডিয়া বা সংস্কৃতির প্রতি আলাদা টান অনুভব করতে শুরু করি। বাবা-মাও কখনো বাধা দেননি বরং আমার ইচ্ছাকে সমর্থন দিয়ে গেছেন।

আনন্দভুবন : সংবাদ উপস্থাপনার জন্য নিজেকে কীভাবে প্রস্তুত করেছেন ?

রুবাইয়াৎ অদিতি : মোটেই আমি প্রস্তুতি নিয়ে সংবাদ উপস্থাপনায় আসিনি। এটা কাকতালীয় ব্যাপার। সে কথায় না যাই, তবে আমি মনে করি না খুব বেশি প্রস্তুতি নিয়ে এ মাধ্যমটিতে টিকে থাকা যায়। আত্মবিশ^াস, প্রত্যয় আপনাকে পথ দেখাবে। প্রতিটি নতুন প্রভাত আমার কাছে নতুন একটি চ্যালেঞ্জ নিয়ে ধরা দেয়। আমি কেবল সেটা ঠিকঠাক কীভাবে ডেলিভারি দেওয়া যায় সে চেষ্টা করি। এভাবেই আমার দিন শুরু হয়।

আনন্দভুবন : সংবাদ উপস্থাপনায় নতুনদের জন্য পরামর্শ ?

রুবাইয়াৎ অদিতি : শিখে এসে কিছু করার নেই। আমি যেটা করিনি, সেটা আরেকজনকে পরামর্শ দিই কীভাবে ? যদিও কয়েক জায়গায় এখন আমিও ক্লাস করাই। সেটা ¯্রফে মাস্টারি করি, এর বেশি কিছু না। তবে সেখানেও তাদের উদ্দেশ্যে আমি বলি, আমি তোমাকে কেবল সংবাদ উপস্থাপনায় পরিবেশ পরিস্থিতি সম্পর্কে বলে দিতে পারব কিন্তু ক্যামেরা রোলিংয়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশটা অন্যরকম হয়ে যাবে। ওই পরিবেশটার সঙ্গে যে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারবে সেই ভালো করবে। তবে চটপটে, স্পষ্টভাষী হওয়া জরুরি। আবার ওভারস্মার্টও নয়। নিজের মধ্যে স্থিরতাও থাকতে হবে।

আনন্দভুবন : গ্ল্যামার কতটা মুখ্য ?

রুবাইয়াৎ অদিতি : আমরা ছেলেবেলায় বিটিভির সংবাদ উপস্থাপন দেখেছি, অনেকেই বাহ্যিকভাবে সুন্দর ছিলেন না। আবার কেউ কেউ খুবই সুন্দর ছিলেন। পেশাটি গ্ল্যামারসর্বস্ব নয়। এ ব্যাপারটা ব্যক্তিত্বনির্ভর। অন্তত আমি সেটাই মনে করি। তবে হ্যাঁ এখনকার সময়কে যদি আমি স্বীকার করি তাহলে বলতেই হবে কর্পোরেট ধারণার কারণে অনেকেই এখন গ্ল্যামারের দ্যুতিতে দর্শকদের মাত করতে চান, আমি আবারও বলছি দিনশেষে দর্শক কিন্তু সংবাদ উপস্থাপনার ধরন-পঠনকে মনে রাখে, গ্ল্যামার চায়ের কাপে ধোঁয়ার মতোই উবে যায়।

আনন্দভুবন : সংবাদ উপস্থাপনার বাইরে কিছু করছেন কি ?

রুবাইয়াৎ অদিতি : এর বাইরে ‘সাতকাহন’ নামের একটি ফ্যাশন হাউজের সঙ্গে আছি। আমি তাদের মডেল হিসেবে কাজ করছি সেখানে। এর পাশাপাশি কর্পোরেট আয়োজনগুলোর উপস্থাপনায় আমার ডাক পড়ে প্রায়ই। 

সাক্ষাৎকার : আহমেদ তেপান্তর, ছবি : সীমান্ত ঘোষ