বর্তমান প্রজন্মের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী সোমনূর মনির কোনাল। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে তার কণ্ঠের মাধুর্য দিয়ে গান গেয়ে শ্রোতাদের মুগ্ধ করে রেখেছেন। কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। মৌলিক গান, নাটকের গান, দেশ ও দেশের বাইরের স্টেজ শো এবং সিনেমার প্লেব্যাক নিয়ে দারুণ ব্যস্ত সময় পার করছেন কোনাল। সংগীতশিল্পী কোনালকে নিয়ে বিস্তারিত থাকছে এবারের আনন্দভুবনের সারেগারে আয়োজন। লিখেছেন শহিদুল ইসলাম এমেল...
‘চ্যানেল আই সেরাকণ্ঠ ২০০৯’ বিজয়ী সোমনূর মনির কোনাল বর্তমানে সিনেমায় প্লেব্যাক, নাটকের গান, মৌলিক গান, বিজ্ঞাপন জিঙ্গেল, মিউজিক ভিডিওর কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। গেল রোজার ঈদে কোনালের বেশ কয়েকটি গান এসেছে। পলাশের ‘ময়ূরাক্ষী’ ছবিতে একটি গান করেছেন জাহিদ নিরবের সঙ্গে। তাছাড়া একাধিক নাটক ও টেলিফিল্মেও প্রকাশিত হয়েছে তার গান।
মে মাসে মুক্তি পাওয়া ‘ফাতিমা’ ছবির ‘আমি শুধু যে তোমার’ গানে কণ্ঠ দিয়েছেন কোনাল। গানটির সুর ও সংগীত পরিচালনা করেছেন পাভেল আরিন এবং কথা লিখেছেন চিরকুট ব্যান্ডের ভোকাল সুমি।
এই গানের মধ্য দিয়ে চিরকুট ব্র্যান্ডের সুমি, পাভেল এবং কোনাল প্রথমবার একসঙ্গে কোনো সিনেমার গান করলেন।
এর আগে ‘দহন’ সিনেমায় ‘প্রেমের সাগর’ শিরোনামে নতুন একটি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন সময়ের জনপ্রিয় শিল্পী ইমরানের সঙ্গে। সোমেশ্বর অলির কথায় গানটির সুর ও সংগীত করেছেন সাজিদ সরকার। এছাড়া গত বছর মুক্তি পাওয়া ‘প্রিয়তমা’ সিনেমায় কোনালের গাওয়া ‘ও প্রিয়তমা’ গানটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়।
বালামের সঙ্গে ‘রাজকুমার’ সিনেমার রাজকুমার শিরোনামের গানটিও দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছে। ‘প্রহেলিকা’ সিনেমার ‘মেঘের নৌকা’, ‘লিডার : আমিই বাংলাদেশ’ সিনেমার ‘সুরমা সুরমা’-সহ বেশকিছু গান শ্রোতাদের পছন্দের তালিকায় ওপরের দিকে আছে।
বর্তমান সময়ের আলোচিত প্লেব্যাক কণ্ঠশিল্পী কোনালের গাওয়া বেশকিছু গান জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে। ‘প্রিয়তমা’, ‘রাজকুমার’-সহ কোনালের গাওয়া একাধিক গান এই তালিকায় রয়েছে। তার মধ্যে ‘বন্ধু’, ‘আমি পারবো না তোমার হতে’, ‘আগুন লাগাইলো’, ‘তুমি আমার জীবন’, ‘মিস বুবলী’, ‘পাই না তোকে’, ‘মেঘের নৌকা’, ‘সুরমা সুরমা’, ‘ও প্রিয়তমা’ এবং ‘রাজকুমার’ উল্লেখযোগ্য।
কোনাল ‘চ্যানেল আই সেরাকণ্ঠ ২০০৯’ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন। সেই সময়ের অনুভূতি জানতে চাইলে বলেন, “যেকোনো প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা সবারই ভালো লাগে। ‘চ্যানেল আই সেরাকণ্ঠ ২০০৯’ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর আমারও খুব ভালো লেগেছিল।”
সংগীত নিয়ে একটি বিশেষ স্মৃতি জানতে চাইলে বলেন, ‘সংগীত ব্যাপারটাই আমার কাছে বিশেষ স্মৃতি। আমি যে গান গাই, মানুষের ভালোবাসা পাই এর থেকে বিশেষ স্মৃতি আর কিছু হতে পারে না।’
সংগীত নিয়ে নিজের ভাবনা ও পরিকল্পনা প্রসঙ্গে কোনাল বলেন, ‘গান করে যাব যতদিন শ্রোতারা চাইবে। আমি শুধু গানকে ভালোবেসে কুয়েত থেকে চলে এসেছি। গানের জন্য আমার মধ্যে সবসময় এক ধরনের প্যাশন কাজ করে। আমি আজীবন গান করে যেতে চাই।’
কোনালের ১৫ বছরের ক্যারিয়ারে ‘আমি না দেখে তোমারে’, ‘স্বপ্নডানা’, ‘ঘুম জড়ানো দু’চোখ মেলে’, ‘আগুন লাগাইলো’, ‘ভুল’, ‘তুমি আমার জীবন’, ‘মন ছুটে যায়’, ‘মেঘ’, ‘বন্ধু’, ‘আমি পারবো না তোমার হতে’, ‘মিস বুবলী’, ‘পাইনা তোকে’, ‘মেঘের নৌকা’, ‘সুরমা সুরমা’, ‘ও প্রিয়তমা’, ‘রাজকুমার’সহ বহু চমৎকার গান উপহার দিয়েছেন কোনাল।
মানিকগঞ্জের মেয়ে কোনাল ‘বীর’ ছবির জন্য পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। পিতার পেশার কারণে কুয়েতে বড়ো হয়েছেন। ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে মায়ের অনুপ্রেরণায় শুধু গানকে পেশা হিসেবে নিতে সুদূর কুয়েত থেকে পরিবার ছেড়ে বাংলাদেশে একাই চলে আসেন কোনাল। কোনালের পরিবার সবাই কুয়েত প্রবাসী। জন্মের মাত্র ৪ বছর পর বাবা-মায়ের সঙ্গে কুয়েতে চলে যান। বড়ো হয়েছেন সেখানেই। কোনালের মাও একজন সংগীতশিল্পী। মায়ের কাছেই সংগীতের শুরু এবং হাতেখড়ি।