নৃত্য ও অভিনয়শিল্পী লায়লা হাসান ৮ আগস্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে নানা খানবাহাদুর আলি আহমেদ খানের বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। মায়ের নাম লতিফা খান আর বাবার নাম এম এ আউয়াল। বাবা বেসরকারি কলেজের ইংরেজির শিক্ষক ছিলেন। মা ছিলেন কাস্টমসের কর্মকর্তা। লায়লা হাসানের নৃত্যজীবন শুরু মাত্র দু'বছর বয়সে। স্টেজে নাচলে দেখা যায় না বলে তাকে টেবিল এনে তার ওপরে দাঁড় করিয়ে দেয়া হতো। বিদ্যালয় জীবন শুরু করেন নারীশিক্ষা মন্দিরে ও কামরুন্নেসা স্কুলে। আর নাচ শিখতেন বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে। তারপর সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজের পর ভর্তি হন বেগম বদরুন্নেসা কলেজে। সেখান থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে। এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে এমএ পাস করেন। লায়লা হাসান ১৯৬৫ সালে সৈয়দ হাসান ইমামকে বিয়ে করেন। লায়লা হাসান নৃত্যের পাশাপাশি টেলিভিশন নাটক এবং চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন। তার অভিনীত টিভি নাটক 'মন পবনের নাও, 'কাজল রেখা', 'ভেলুয়া সুন্দরী', 'মহুয়া', 'রাণী ভবানীর পথ', 'রত্নদ্বীপ', 'পাশাপাশি' এবং 'আশ্চর্য এক রাতের গল্প'। তিনি 'ঘরে বাইরে', 'এইতো প্রেম', 'ডনগিরি' চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন। তিনি ১৯৯০ সালে নৃত্যসঙ্ঘ 'নটরাজ' প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৯৬ সালে নটরাজ থিয়েটার এবং নাঈম হাসান সুয়জার সাথে মঞ্চনাটক করতে শুরু করে। লায়লা হাসান নটরাজের সভাপতি এবং সুয়জা সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কাজ করেন। লায়লা হাসান বাংলা একাডেমি এবং ওয়েস্ট বেঙ্গল ডান্স ফেডারেশনের আজীবন সদস্য। তিনি এশিয়াটিক সোসাইটির সদস্য এবং 'বাংলাদেশ নৃত্যশিল্পী সংঘ' সভাপতি। তিনি ১৯৯৬ সালে নৃত্যশিল্পী বিষয়ের উপর হৃদয়ে বাজে নূপুর এবং চারুকলা বিষয়ে মোহনরূপে গ্রন্থ রচনা করেন। তিনি ১৯৮০ থেকে ৮৫ সালে কালপর্বে বাংলাদেশ টেলিভিশনে সম্প্রচারিত টেলিভিশন অনুষ্ঠান 'রুমঝুম' উপস্থাপনা করেন। ওই অনুষ্ঠান থেকেই বর্তমানের জনপ্রিয় তারকা ঈশিতা, তারিন, শ্রাবন্তী, রিয়া এবং রিচি উঠে আসেন। লায়লা হাসান বাচসাস পুরস্কার ২০০১, কাজী মাহবুব উল্লাহ বেগম জেবুন্নেচ্ছা ট্রাস্ট পুরস্কার ২০০১ এবং
একুশে পদক ২০১০ লাভ করেন। লায়লা হাসানের জন্মদিনে আনন্দভুবনের পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা।
লেখা: শহিদুল ইসলাম এমেল