আইয়ুব বাচ্চুর জন্মদিন আজ

16 Aug 2021, 02:09 PM জন্মদিন শেয়ার:
আইয়ুব বাচ্চুর জন্মদিন আজ



বিখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ, গায়ক, গীতিকার এবং গীটারবাদক আইয়ুব বাচ্চু ১৯৬২ সালের ১৬ আগস্ট চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া উপজেলার খরনা ইউনিয়নে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ইশহাক চোধুরী এবং মা নুরজাহান বেগম। তাদের পরিবার ছিল একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবার।  তিনি রক ব্যান্ডদল এলআর বি-এর গায়ক ও গীটারবাদক হিসেবে জনপ্রিয়তা লাভ করেন। তাকে বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ শিল্পী এবং গীটারবাদক বলা হয়। আইয়ুব বাচ্চু ১৯৭৫ সালে  সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি  হন। ১৯৭৯ সালে ওই স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়ে চট্টগ্রাম কলেজ থেকে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। চট্টগ্রামে কলেজে পড়াকালীন সহপাঠী কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে  একটি ব্যান্ডদল গড়ে তোলেন। ব্যান্ডদলটির নাম ছিল 'গোল্ডেন বয়েজ'। পরে নাম বদলে করা হয় 'আগলি বয়েজ'। সেই ব্যান্ডের গায়ক ছিলেন কুমার বিশ্বজিৎ আর গিটারিস্ট ছিলেন আইয়ুব বাচ্চু।  সেই সময়ে তারা মূলত চট্টগ্রামের পটিয়ায় বিভিন্ন বিবাহ অনুষ্ঠান এবং শহরের বিভিন্ন ক্লাবে গান করতো। পরবর্তীসময়ে ১৯৮০ সালে আইয়ুব বাচ্চু ও কুমার বিশ্বজিৎ যখন সোলসে যোগদান করেন তখন ব্যান্ডদলটি ভেঙে যায়।  তারপর ১৯৭৭ সালে তিনি 'ফিলিংস' (বর্তমানে 'নগর বাউল' নামে পরিচিত) এ যোগদান করেন এবং ব্যান্ডদলটির সাথে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত কাজ করেন। একইবছরে তিনি জনপ্রিয় রক ব্যান্ডদল সোলস-এর প্রধান গীটারবাদক হিসেবেও কাজ করেন। সোলসের সঙ্গে তিনি বেশ কয়েকটি  অ্যালবামে কাছ করেন। তারমধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য: সুপার সোলস (১৯৮২), কলেজের করিডোরে (১৯৮৫), মানুষ মাটির কাছাকাছি (১৯৮৭) এবং ইস্ট অ্যান্ড ওয়েস্ট (১৯৮৮) প্রভৃতি। ১৯৯১ সালের ৫ এপ্রিল তিনি তার নিজের ব্যান্ডদল 'লিটল রিভার' গঠন করেন, যা পরবর্তীকালে 'লাভ রান্স ব্লাইন্ড' নামে বা সংক্ষেপে এলআরবি নামে জনপ্রিয়তা লাভ করে। তিনি তার মৃত্যু অবধি ২০১৮ সাল পর্যন্ত ২৭ বছর ধরে ব্যান্ডদলটির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাছাড়া একজন একক শিল্পী হিসেবেও তিনি সফলতার শীর্ষে পৌঁছেছিলেন। তার প্রথম একক অ্যালবাম রক্ত গোলাপ, যা ১৯৮৬ সালের সেপ্টেম্বরে প্রকাশ হয়। এবং দ্বিতীয় অ্যালবাম ময়না (১৯৮৮) দিয়ে তিনি তার একক কর্মজীবনের সফলতা অর্জন করেন। তারপর কষ্ট (১৯৯৫) অ্যালবামটি প্রকাশ করেন, যা সেই সময়ে প্রচুর সফলতা অর্জন করে। ২০০৭ সালে তিনি দেশের প্রথম বাদন অ্যালবাম 'সাউন্ড অফ সাইলেন্স' প্রকাশ করেন। এলআরবি'র সঙ্গে থাকাকালীন আইয়ুব বাচ্চু ছয়টি মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার এবং একটি সিটিসেল-চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডস পেয়েছেন। ২০০৪ সালে বাচসাস পুরস্কার জিতেছেন সেরা পুরুষ ভোকাল বিভাগে। ২০১৭ সালে  টেলিসিনে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার পান আইয়ুব বাচ্চু।

আইয়ুব বাচ্চু ফেরদৌস চন্দনা-কে বিয়ে করেন ১৯৯১ সালের ৩১ জানুয়ারি। তাদের দু'টি সন্তান আছে। মেয়ে ফাইরুজ সাফরা আইয়ুব এবং ছেলে আহনাফ তাজওযার আইয়ুব। আইয়ুব বাচ্চু দীর্ঘদিন  ফুসফুসে পানি জমা অসুস্থতায় ভোগার পর ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে  ঢাকায় তার নিজ বাসভবনে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর দুইদিন আগে তিনি রংপুরে তার শেষ কনসার্ট করেন। আইয়ুব বাচ্চুকে চট্টগ্রামের চৈতন্য গলিতে তাদের পারিবারিক কবরস্থানে  মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হয়। আজ আইয়ুব বাচ্চুর জন্মদিন। বিখ্যাত এই শিল্পীর জন্মদিনে আমরা শ্রদ্ধার সঙ্গে তাকে স্মরণ করছি...


লেখা: শহিদুল ইসলাম এমেল