নিয়মিত লিখিয়েদের ভালোবাসা

14 May 2023, 03:45 PM অন্যান্য শেয়ার:
নিয়মিত লিখিয়েদের ভালোবাসা

২৮ বছরে পদার্পণ করেছে আনন্দভুবন। দীর্ঘ এই কারপরিক্রমায় বহু কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, লেখকের লেখায় সমৃদ্ধ হয়েছে আনন্দভুবন। অনেকে নিয়মিত লিখেছেন, লিখছেন- আনন্দভুবনের ২৮ বর্ষে পদাপর্ণে তাঁদের কয়েকজন জানিয়েছেন শুভেচ্ছা...


বিনোদন পত্রিকার সব উপাদানই আনন্দভুবনে বিদ্যমান

প্রফেসর শেখ নেছারুদ্দীন আহমদ

ভ্রমণসাহিত্য লেখক

ধারাবাহিক ভ্রমণ কাহিনি লেখার সুবাদে প্রায় দেড় যুগের অধিককাল আনন্দভুবন বিনোদন পত্রিকার সাথে আমার জড়িত থাকার এক আনন্দঘন অভিজ্ঞতা রয়েছে। আনন্দভুবন একটি ব্যতিক্রমধর্মী বিনোদন পত্রিকা। বিনোদন পত্রিকার সব উপাদানই এতে বিদ্যমান। কিন্তু যে-কারণে আনন্দভুবন অনন্য তা হলো এর পরিবেশনায় বৈচিত্র্য ; সাহিত্য, স্মৃতিকথা, ভ্রমণকাহিনি, গবেষণামূলক এবং তথ্যবহুল প্রবন্ধ, বৈচিত্র্য ইত্যাদি যা সচরাচর বিনোদন পত্রিকায় দৃষ্টিগোচর হয় না সেগুলোর সমাহার। ঈদ সংখ্যাগুলো দেশের খ্যাতনামা লেখকদের লেখায় সমৃদ্ধ হয়ে অন্যান্য যেকোনো ঈদ সংখ্যা সমতুল্য গণ্য হতে পারে। এষড়ংংু পেপারে উন্নতমানের নির্ভুল ছাপা এমন আর কোনো বিনোদন পত্রিকা পেপার স্টলে খুঁজে পাওয়া যাবে কি না সন্দেহ।

বিনোদন পত্রিকা ২৮ বছর জনপ্রিয়তার ঊর্ধ্বে থেকে বাজারে টিকে থাকা এক বিরল ঘটনা। আনন্দভুবন আরো সমৃদ্ধ হোক, আরো উন্নত হোক, দীর্ঘকাল ধরে পাঠক মনে আনন্দ দান করুক।


আসলে বিনোদনের মোড়কে মোড়ানো একটি লাইফ স্টাইল পত্রিকা

মাহমুদা আখতার

আবৃত্তিকর্মী

আনন্দভুবন। বিনোদন ম্যাগাজিন। ‘বিনোদন’ বলতে বেশিরভাগ মানুষ মোটা দাগে যা বোঝে, ‘আনন্দভুবন’ ঠিক সে ধারার পত্রিকা নয়।

বিষয়ভিত্তিক বিভিন্ন সংখ্যা যখন ‘আনন্দভুবন’ পরিবার বের করে, তখন পত্রিকার সাহিত্যমূল্য বেড়ে যায়। নিয়মিত প্রকাশনার পাশাপাশি বিশেষ কারণে বিশেষ বিষয়ে যখন পত্রিকাটি ‘বিশেষ সংখ্যা’ বের করে তখন সেই বিষয় নির্বাচনেও থাকে বৈচিত্র্যের সমাহার। এই যেমন : জাতীয় বা আন্তর্জাতিক বিভিন্ন দিবস এবং ব্যক্তিত্বের পাশাপাশি প্রাধান্য পায় অন্যান্য উপকরণও। পর্যটন, চিকিৎসা, নাটক, আবৃত্তি, চলচ্চিত্র, রান্না, খেলা, চা, মসলা, আলু, বিয়ে, জুতা... এ রকম আরো কত কী ! বিষয়ভিত্তিক সাজানো ‘আনন্দভুবন’ হাতে নিয়ে পাঠক পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা উল্টেপাল্টে দেখতে-পড়তে থাকে নির্দিষ্ট বিষয়ে ছবিসহ একাধিক প্রতিবেদন, ফিচার, মুক্তগদ্য, কবিতা, গল্প... এ যেন আসলে বিনোদনের মোড়কে মোড়ানো একটি লাইফ স্টাইল পত্রিকা। সেসব বিশেষ সংখ্যায় একদিকে যেমন থাকে পরিচিত লেখকের লেখা, অন্যদিকে তেমনিভাবে নবীন লিখিয়েদের লেখাও।

জন্মলগ্ন থেকেই ‘আনন্দভুবন’ নিষ্ঠার সঙ্গে প্রদায়ক, প্রতিবেদক, সাংবাদিক আর লেখক তৈরি করতে করতে পথ চলছে। এখানে মডেল হিসেবেও সাধারণ-অসাধারণ নির্বিশেষে সবাই সুযোগ পায়। তাই নির্দ্বিধায় একথা বলা যায় যে, প্রদায়ক-সাংবাদিক-লেখক-পাঠক হিসেবে নবীন-প্রবীণ সবার জন্যই পত্রিকাটি প্রকৃত অর্থেই ‘আনন্দভুবন’।


আনন্দভুবন আমাকে দারুণভাবে অনুপ্রাণিত করত

ডা. তাওহীদা রহমান ইরিন

চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ

আনন্দভুবনের ২৮ বছর পদার্পণ উপলক্ষে অনেক অনেক শুভকামনা আর আনন্দভুবনের সঙ্গে আমার সে সম্পর্ক তা অনেকটা পারিবারের মতো। ছোটো থেকে বড়ো হয় যেভাবে একটা মানুষ আমার লেখার পরিধিও আনন্দভুবনের সঙ্গে সঙ্গে বড়ো হয়েছে। ছেলেবেলা থেকেই আমার যেকোনো সাপ্তাহিক, পাক্ষিক বা মাসিক ম্যাগাজিনের প্রতি খুব দুর্বলতা ছিল। আমি যখন ছোটো ছিলাম আমার নানি যে ম্যাগাজিন পড়তেন সে ম্যাগাজিনগুলো আমি সংগ্রহ করতাম এবং ম্যাগাজিনে লেখকদের যে ছবি থাকত সেটা আমাকে দারুণ অনুপ্রাণিত করত, খুব ভালো লাগত। তখন থেকেই কোনো একটি ম্যাগাজিনে আমার লেখা প্রকাশ হবে এই স্বপ্নটা ছেলেবেলা থেকেই ছিল। আমি যেহেতু দেশের বাইরে অনেকদিন ছিলাম। দীর্ঘ ১২ বছর বাইরে থাকার পর যখন দেশে কাজ করতে শুরু করি ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে তখন আনন্দভুবনই আমাকে এই সুযোগ করে দেয়। আনন্দভুবনই হচ্ছে সেই প্রথম ম্যাগাজিন যার মাধ্যমে আমার ম্যাগাজিনে লেখার আত্মপ্রকাশ ঘটে। এবং আনন্দভুবনের পাতায় আমার ছবি ছাপাবে। সেই স্বপ্নকে আনন্দভুবন বাস্তব রূপ দেয় যখন আনন্দভুবন-এর একটি বিশেষ সংখ্যার প্রচ্ছদে আমার ছবি প্রকাশ করে সেটি ছিল আমার জন্মদিন। সেই জন্মদিনের মাসে আনন্দভুবনের প্রচ্ছদে আমার ছবি জায়গা পায়। অর্থাৎ আমি আনন্দভুবনের কাভার গার্ল হই। আমি সাধারণ হেলথ টিপসগুলোই শুরুর দিকে লিখতাম। তারপর আমাকে নিয়ে প্রচ্ছদ হলো। এরপরে আমার যত এচিভমেন্ট আছে আমার বেড়ে ওঠা বিভিন্ন ধরনের এক্সট্রা কারিকুলাম অ্যাকটিভিটিস সবকিছুই কাভার করত আনন্দভুবন এবং এখনো করে যাচ্ছে। আমি যতই ব্যস্ত থাকি না কেন আমি এখনো চেষ্টা করি আনন্দভুবনে একটা করে হেলথ টিপস বা যেকোনো ধরনের লেখা আনন্দভুবনে দিতে। আমার সঙ্গে এই পথচলা আরো অনেক দূর এগিয়ে যাবে। সুন্দর হোক আনন্দভুবনের আগামী দিনগুলো।


আনন্দভুবন সবসময় অক্ষুন্ন রেখেছে তার বিনোদনের শিল্পমান

ডা. আওরঙ্গ জেব আরু

শিক্ষক, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ

বিনোদন পাক্ষিক আনন্দভুবন বাংলাদেশের প্রথিতযশা পত্রিকা। আমি যতদূর জানি বাংলাদেশের এই বিনোদন সংগ্রাম বা শিল্প সাহিত্যের সংগ্রাম শুরু করার যে কয়টি পত্রিকা অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে তার মধ্যে আনন্দভুবন অন্যতম। আনন্দভুবন সবসময় অক্ষুণœ রেখেছে তার বিনোদনের শিল্পমান। কখনোই সেই শিল্পমান অটুট নয়, এমন তথ্য প্রচার করেনি। তাছাড়া জাতীয় সংস্কৃতিতে আনন্দভুবন বরাবরই তার স্বাক্ষর রেখে এসেছে। আনন্দভুবন বিগত সময় বহুবার ঈদ ফ্যাশন প্রতিযোগিতা করেছে, যা দিয়ে বাংলাদেশের দেশজ সংস্কৃতিকে প্রমোট করা হয়েছে। আনন্দভুবন এরকম নানাবিধ সাংস্কৃতিক কর্মকাÐের মাধ্যমে বিনোদন পাক্ষিক হিসেবে অপরাপর বিনোদন পাক্ষিকের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্বের অন্যতম জায়গা করে নিয়েছে। আনন্দভুবনকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।


আনন্দভুবন আমার প্রিয় শিল্পতীর্থ

কানিজ পারিজাত

কবি ও গল্পকার

আনন্দভুবনের সাথে পরিচয় বেশ আগে ! বেশ আগে বলতে আমি তখন স্কুল-শিক্ষার্থী। ঈদের সময় বা উৎসবে-পার্বণে পত্রিকার দোকানে সাজিয়ে রাখা পত্রিকা/ম্যাগাজিনগুলোর ভেতর কেন যেন ‘আনন্দভুবনে’ই চোখটা আটকে যেত প্রচ্ছদ, বিষয়বস্তু এবং গুণগতমানÑ সব মিলিয়ে দারুণ ব্যতিক্রমী এক শিল্প ! কাকতালীয়ভাবে ব্যতিক্রমী সেই আনন্দভুবনের কোনো এক ঈদ সংখ্যায় বেশ কয়েক বছর আগে আমিও আটকে গেলাম গল্পকার হিসেবে ! পূর্বে কবিতা দিয়ে অন্যত্র আমার আত্মপ্রকাশ বা পরিচিতি ঘটলেও গল্পকার হিসেবে আমার প্রথম আত্মপ্রকাশ ঘটে আনন্দভুবনের হাত ধরেই!! এক্ষেত্রে পুরো কৃতিত্ব আনন্দভুবনের সম্পাদক শ্রদ্ধেয় ইকবাল খোরশেদ ভাই-এর! অসংখ্য গল্প আমি বহুবছর বহন করে চলার পরও কোথাও পাঠানোর তাগিদ অনুভব করিনি! সেই তাগিদ আমাকে দেন আনন্দভুবনের সম্পাদক শ্রদ্ধেয় ইকবাল খোরশেদ ভাই! তিনিই আমার গল্প দেখে আমাকে বলেন, আমার গল্পের বুনট অসাধারণ, ঈদ সংখ্যায় যেন গল্প পাঠাই, আরো বলেন, আমি যেন কখনো কলম না থামাই! সেই থেকেই আছি আনন্দভুবনের সাথে গল্পকার হিসেবে ঈদ সংখ্যায় বা বিশেষ সংখ্যায়! শিশুর হাতেখড়ির প্রথম বিদ্যাপীঠের মতোই আমার কাছে আনন্দভুবন আমার প্রথম বিদ্যাপীঠ-আমার প্রিয় শিল্পতীর্থ!! আনন্দভুবনের জন্য তাই আমার ভালোবাসা অকৃত্রিম!

আনন্দভুবনের জন্য তার পাঠকশ্রেণি এবং অম্লান বদনে কাজ করে যাওয়া একঝাঁক কর্মীর ভালোবাসাও অকৃত্রিম! আর তাই তো আনন্দভুবন এত দীর্ঘসময়ব্যাপী সুনামের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ২৮ বছরে পদার্পণ করছে ১৬ মে তারিখে ! একটি পত্রিকা বা ম্যাগাজিন যখন প্রায় তিন দশক সুনামের সাথে পাঠকমহলে জনপ্রিয়তা বজায় রাখে, তখন তার ব্যতিক্রমী ক্যারিশমা বা গুণগতমান নিয়ে প্রশ্নেরও অবকাশ থাকে না!

২৮ বছরে পদার্পণের এই শুভক্ষণে আনন্দভুবনের মেধাবী সম্পাদক ও নিরলসভাবে কাজ করে যাওয়া একঝাঁক দক্ষ কর্মীকে জানাই আন্তরিক অভিবাদন!

আগামীর পথচলা আরো উজ্জ্বল, আরো ঝলমলে হোক - জয়তু আনন্দভুবন!