বাবার কবরের পাশে শায়িত নায়ক ফারুক

17 May 2023, 02:45 PM শ্রদ্ধাঞ্জলি শেয়ার:
বাবার কবরের পাশে শায়িত নায়ক ফারুক

চতুর্থ জানাজা শেষে নিজ বাড়িতে বাবা আজগর হোসেন পাঠানের কবরের পাশে শায়িত হলেন বাংলা চলচ্চিত্রের মিয়াভাই খ্যাত নায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন খান দুলু [ফারুক]। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।

১৬ মে ২০২৩ মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার তুমলিয়া ইউনিয়নের সোম টিওরী পাকা জামে মসজিদ মাঠে তার শেষ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে ওই মসজিদ সংলগ্ন পারিবারিক কবরস্থানে মরহুমকে দাফন করা হয়। এসময় তার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহকর্মী, বীর মুক্তিযোদ্ধারা এবং বাংলাদেশ চলচ্চিত্র অঙ্গনের ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিক, পরিবারের সদস্য ও বহু গুণগ্রাহী উপস্থিত ছিলেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মৃত্যু হলে তাকে যেন বাবার কবরের পাশে দাফন করা হয়। জীবিত অবস্থায় তিনি পরিবারের সদস্যদের অসিয়ত করে যান। সেই অসিয়ত অনুযায়ী তাকে তার বাবার পাশেই কবর দেওয়া হয়।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার সময় তার লাশ পৈতৃক ভিটায় পৌঁছায়। সেখানে এলাকার সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ প্রিয় নায়কের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান। পরে তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। 

এর আগে সন্ধ্যা পৌনে ৫টায় ঢাকার গুলশানের আজাদ মসজিদে জানাজা শেষে গাজীপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হয় ফারুকের লাশবাহী গাড়ি।

উল্লেখ্য, ১৫ মে ২০২৩ সোমবার বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টায় সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে মারা যান নায়ক ফারুক। সোমবার রাতেই সিঙ্গাপুরে ফারুকের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। মঙ্গলবার সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইটে মরদেহ আনা হয় ঢাকায়। সেখান থেকে নেওয়া হয় নায়কের উত্তরার বাসভবনে। তারপর ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অভিনেতাকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এরপর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে [বিএফডিসি] ফারুকের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এফডিসি থেকে নায়ক ফারুকের মরদেহ নেওয়া হয় চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে।

ফারুকের প্রকৃত নাম আকবর হোসেন পাঠান দুলু। ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ আগস্ট মানিকগঞ্জের ঘিওরে জন্মগ্ৰহণ করেন। চলচ্চিত্রে আগমন ঘটে ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ সিনেমার মাধ্যমে। এরপর একের পর এক অভিনয় করেছেন। তার ছবির সংখ্যা শতাধিক। উল্লেখযোগ্য সিনেমা ‘লাঠিয়াল’, ‘সুজন সখী’, ‘নয়নমনি’, ‘সারেং বৌ’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘সাহেব’, ‘আলোর মিছিল’, ‘মিয়াভাই’।

তিনি ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৭ আসন থেকে আওয়ামী লীগের টিকিটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি ক্ষমতাসীন এই দলটির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করেন ফারুক।