কথাশিল্পী কায়েস আহমেদের প্রয়াণদিবস আজ

14 Jun 2023, 02:29 PM শ্রদ্ধাঞ্জলি শেয়ার:
কথাশিল্পী কায়েস আহমেদের প্রয়াণদিবস আজ

কথাসাহিত্যিক কায়েস আহমদ [২৫—এ মার্চ ১৯৪৮-১৪ই জুন ১৯৯২] ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ মার্চ পশ্চিমবঙ্গের হুগলী জেলার শ্রীরামপুর থানার বড়ো তাজপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। মা ওলিউন্নেসা, বাবা শেখ কামালউদ্দিন আহমেদ। কায়েস আহমদের পুরো নাম শেখ কায়েসউদ্দিন আহমেদ (মিন্টু)।


১৯৪৭-এর দেশ ভাগের পর কায়েস আহমেদ সপরিবারে ঢাকায় আসেন। এখানে এসে তাঁর বাবা শেখ কামালউদ্দিন আহমেদ মল্লিক অ্যান্ড কোম্পানিতে হিসাব রক্ষক হিসেবে চাকরি নেন। কিশোর কায়েস তখন কে. এল. জুবিলি স্কুলে ভর্তি হন চতুর্থ শ্রেণিতে। কিছুদিন পর কায়েস আহমেদরা আবার হুগলী চলে যান। ছোটো দুই ভাই কাবুল ও টুটুনকে নিয়ে মা ওলিউন্নেসা হুগলীতে রয়ে যান। কায়েস বাবার সঙ্গে ঢাকায় ফিরে আসেন। তাঁতি বাজারের প্রসন্ন পোদ্দার লেনের কোম্পানির ভাড়া করে দেওয়া বাসায় শুরু হয় বাবা- ছেলের সংসার। ১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দে জুবিলি স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাশ করার পর কায়েস আহমেদ জগন্নাথ কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন ১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দে। ১৯৬৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে সম্মান শ্রেণিতে ভর্তি হন। ১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দে হঠাৎ বাবার মৃত্যু ঘটলে কায়েস আর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শেষ করতে পারেন নি।


কায়েস আহমেদ ১৯৬৯-এর গণ-আন্দোলন এবং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন।


ছাত্রাবস্থায় দৈনিক গণকণ্ঠে সাংবাদিকতার মধ্য দিয়ে কায়েস আহমেদের কর্মজীবনের শুরু। এরপর কিছুদিন দৈনিক সংবাদেও কাজ করেন তিনি। প্রচণ্ড আপসহীন হওয়ায় দু’প্রতিষ্ঠান থেকেই চাকরি ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। এরপর কায়েস ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে গেন্ডারিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে নবম-দশম শ্রেণির বাংলার শিক্ষক নিযুক্ত হন। ১৯৮০ খ্রিষ্টাব্দে উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলে বাংলার শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত এই স্কুলে শিক্ষকতা করেন। ১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দে কায়েস আহমেদ শারমীন নাহারের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁদের একমাত্র পুত্র অনীক আহমেদ।


ছাত্রাবস্থাতেই ষাটের দশকে কায়েসের লেখালেখির শুরু। উচ্চা মাধ্যমিক পড়াকালীন তাঁর প্রথম গল্প প্রকাশিত হয় ‘পূর্বদেশ’ পত্রিকায়। কায়েস আহমেদের প্রকাশিত গ্রন্থসমূহ হলো- গল্পগ্রন্থ : অন্ধ তীরন্দাজ [১৯৭৮], নির্বাসিত একজন [১৯৮৬], লাশকাটা ঘর [১৯৮৭ ; উপন্যাস : দিনযাপন [১৯৮৬] ; জীবনীগ্রন্থ : রথীন্দ্রকান্ত ঘটক চৌধুরী ; এছাড়াও বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয় তাঁর অনেক প্রবন্ধ ও নিবন্ধ। সম্পাদনা করেন মানিক বন্দ্যোপাধ্যয় রচনাসমগ্র। মৃত্যুর পর ২০০১ খ্রিষ্টাব্দে মাওলা ব্রাদার্স থেকে প্রকাশিত হয় ‘কায়েস আহমেদ সমগ্র’।

১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ জুন ঢাকায় তাঁর মৃত্যু হয়।

লেখা : মাহমুদা আখতার