চলে গেলেন কবি মোহাম্মদ রফিক

কবি মোহাম্মদ রফিক আর নেই। ৬ আগস্ট ২০২৩ বরিশাল থেকে ঢাকা ফেরার পথে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। 

মোহাম্মদ রফিক বরিশালে তার বোনের বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলেন। ৬ আগস্ট রবিবার রাতে সেখান থেকে ঢাকা ফেরার পথে তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে সেখানকার থানা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত ১০টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এরপর তার মরদেহ বাগেরহাটে গ্রামের বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই দাফনের ব্যবস্থা করা হয়।

কবি মোহাম্মদ রফিক ১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ অক্টোবর বাগেরহাটে জন্মগ্ৰহণ করেন। ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি মোহাম্মদ রফিক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ছিলেন।

মোহাম্মদ রফিক খুলনা জেলা স্কুল থেকে ১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দে মাধ্যমিক পাস করেন। পরে ঢাকার নটরডেম কলেজে ভর্তি হন। ১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দে উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পর রাজশাহী সরকারি কলেজে ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হন এবং স্নাতক শেষ করেন।

তার আত্মপ্রকাশ গত শতকের ছয়ের দশকে। পাকিস্তান আমলে ছাত্র আন্দোলন ও কবিতায় এবং স্বাধীন বাংলাদেশে আটের দশকে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে তিনি কাব্যিক রসদ জুগিয়ে বিখ্যাত হন।

১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘বৈশাখী পূর্ণিমা’ প্রকাশিত হয়। ১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশ পায় তার দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘ধুলার সংসারে এই মাটি’।

কবির উল্লেখযোগ্য অন্যান্য কাব্যগ্রন্থগুলো হলো- ‘কীর্তিনাশা' [১৯৭৯], ‘খোলা কবিতা’ ও ‘কপিলা’ [১৯৮৩], ‘গাওদিয়ায়’ [১৯৮৬], ‘স্বদেশী নিঃশ্বাস তুমিময়’ [১৯৮৮], ‘মেঘে এবং কাদায়’ [১৯৯১], ‘রূপকথা কিংবদন্তি’ [১৯৯৮], ‘মৎস্য গন্ধ্যা’ [১৯৯৯], ‘মাতি কিসকু’ [২০০০], ‘বিষখালি সন্ধ্যা’ [২০০৩], ‘নির্বাচিত কবিতা’ [২০০৩], ‘কালাপানি’ [২০০৬], ‘নির্বাচিত কবিতা’ [২০০৭], ‘নোনাঝাউ’ [২০০৮], ‘দোমাটির মুখ’ [২০০৯], ‘ত্রয়ী’ [২০০৯], ‘মোহাম্মদ রফিক রচনাবলী-১’ [২০০৯], ‘মোহাম্মদ রফিক রচনাবলী-২’ [২০১০]।

কবিতার পাশাপাশি তার গদ্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে : ‘ভালোবাসার জীবনানন্দ’ [২০০৩], ‘আত্মরক্ষার প্রতিবেদন’ [২০০১], ‘স্মৃতি বিস্মৃতির অন্তরাল’ [২০০২]।

বাংলা সাহিত্যে অবদানের জন্য ১৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান মোহাম্মদ রফিক। এছাড়া আলাওল পুরস্কারসহ বেশকিছু পুরস্কার, পদক ও সম্মাননা পেয়েছেন তিনি।