সালতামামি ২০২২, ছোটোপর্দায় নবীন শিল্পীদের জয় জয়কার

15 Jan 2023, 12:58 PM আকাশলীনা শেয়ার:
সালতামামি ২০২২, ছোটোপর্দায় নবীন শিল্পীদের জয় জয়কার

প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলের ব্যবহার। যার ফলে মানুষ এখন টেলিভিশনের চেয়ে মোবাইলমুখী বেশি হচ্ছেন। ঘরে কিংবা রাস্তায় যেকোনো জায়গায় টাইম পাস করার জন্য সঙ্গী হিসেবে মোবাইল সেট বেছে নিয়েছেন। অ্যান্ড্রয়েড এর প্রসার ঘটায় মানুষ বিনোদনও গ্রহণ করছেন মোবাইল থেকে। যার ফলে কর্মক্ষেত্রও বেড়েছে। আগে একজন অভিনয়শিল্পী মাসে চার- পাঁচটি নাটকে অভিনয় করতে পারতেন, আজ একজন শিল্পী প্রায় প্রতিদিনই কোনো-না- কোনো কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বিশেষ করে এখন তারা টেলিভিশনের চেয়ে ওটিটি প্লাটফর্মে বেশি কাজ করছেন। ইউটিউবের পাশাপাশি অনেক প্রতিষ্ঠান নিজস্ব অ্যাপস তৈরি করে ওটিটি কনটেন্ট আপলোড করছেন। দর্শকও বেশ সাড়া দিচ্ছেন। আগামীতে এর ব্যবহার আরো বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। সারাবছর টেলিভিশনের নাটকের পাশাপাশি ওটিটি প্লাটফর্মের কাজ নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন শিল্পীরা। বিস্তারিত লিখেছেন শেখ সেলিম...

 

একটা সময় বিনোদনের একমাত্র বাহন ছিল টেলিভিশন। তাও আবার সাদাকালো টেলিভিশন। টেলিভিশনও সহজলভ্য ছিল না, এক গ্রামে একটি কিংবা দুটি টেলিভিশন থাকত, অনেক জায়গায় বিদ্যুতেরও ব্যবস্থা ছিল না, সে সময়ে বাজার থেকে ব্যাটারি ভাড়া করে মাসে একটি সিনেমা কিংবা বিদেশি সিরিয়াল আলিফ লায়লা, টিপু সুলতান-এর মতো সিরিয়ালগুলো দেখতে দর্র্শক মুখিয়ে থাকতেন। সময়ের পরিক্রমায় এই দেশে স্যাটেলাইট চ্যানেলের গোড়াপত্তন হয়। সেইসঙ্গে সহজলভ্য হয় টেলিভিশন, সাদাকালো দুনিয়া থেকে মানুষ রঙিন দুনিয়ায় পদার্পণ করে অর্থাৎ রঙিন টেলিভিশন আসে। স্যাটেলাইট চ্যানেলে যখন মানুষ খুশি, এরপর চলে আসে অ্যান্ড্রয়েড প্রযুক্তি। মানুষের হাতে হাতে এখন অ্যান্ড্রয়েড মুঠোফোন। অ্যান্ড্রয়েড পৃথিবীকে হাতের মুঠোয় নিয়ে এসেছে। যেখানে ইচ্ছে সেখানে বসেই পুরো পৃথিবীর খবর পাচ্ছেন অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলের দৌলতে। তাই দিন দিন টেলিভিশন হারাচ্ছে দর্শক। দর্শক এখন বিনোদন নিচ্ছেন মুঠোফোনে। অবসর সময়ে এখন আর টেলিভিশনের সামনে বসছেন না দর্শক। মুঠোফোনে দেখে নিচ্ছেন তার পছন্দের নাটক, সিনেমা কিংবা অন্যান্য অনুষ্ঠান। বিনোদনের এখন সবচেয়ে বড়ো মাধ্যম ইউটিউব চ্যানেল। ইউটিউব চ্যানেলে দর্শক অভ্যস্ত হয়ে যাওয়ায় প্রযোজক, পরিচালকেরাও এখন ইউটিউব কিংবা তাদের নিজস্ব অ্যাপস তৈরি সেখানে বিনোদনের বিভিন্ন কনটেন্ট দিচ্ছেন, দর্শকও দেখছেন। সব মিলিয়ে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে ইউটিউব চ্যানেল ও বিনোদনের অ্যাপসগুলো। যার ফলে ব্যস্ততা ও আয় দুটোই বেড়েছে শিল্পীদের। প্রযুক্তির এমন আবির্ভাবে অনেকেই এখন এই মাধ্যমে কাজ করে সাবলম্বী হচ্ছেন। প্রযুক্তির এমন কল্যাণে গেল বছর নতুুন পুরাতন সবাই টেলিশিনের নাটকের পাশাপাশি অ্যাপস ও ইউটিউবের নাটক, ওয়েবসিরিজ ও অন্যান্য কনটেন্ট নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। গেল বছরে দর্শকপ্রিয় নাটকের শিল্পীদের ওটিটি প্লাটফর্ম বা সিনেমায় কাজ করতে দেখা গেছে এবং অনেকের ছবিও বেশ দর্শকপ্রিয়তা পায়।  মোশাররফ করিম, চঞ্চল চৌধুরী, আফরান নিশো, মেহজাবিন চৌধুরী, জিয়াউল ফারুক অপূর্ব, তানজিন তিশা, ইন্তেখাব দিনার, জাকিয়া বারী মম, তাসনিয়া ফারিনরা টিভি নাটকে কাজ করার পাশাপাশি ওটিটি বা সিনেমায় সময় দিয়েছেন বেশি। এ বছর উল্লেখযোগ্য নাটকের মধ্যে ছিল- ‘মি. কুল’, ‘কাল থেকে শুরু’, ‘চোর হলেও মানুষ ভালো’, ‘নানা বাড়ি বরিশাল’, ‘দাওয়াত’, ‘প্রেম অল্পস্বল্প’, ‘অঘটন’, ‘ঘটক’, ‘রুমমেট’, ‘ডিগবাজী’, ‘মি. কিপ্টা’, ‘চম্পা হাউজ’, ‘পুনর্জন্ম-৩’, ‘রিকশা গার্ল’, ‘প্রস্থান’, ‘ফ্রিল্যান্সার নাদিয়া’, ‘অ্যাম্বুলেন্স গার্ল’, ‘ভয়েস ক্লিপ’, ‘লাভ ভার্সেস ক্রাশ টু’, ‘প্রশ্রয়’, ‘উড়ো প্রেম’, ‘অঘটন’, ‘আপনজন’, ‘নিহত নক্ষত্র’, ‘বদলে যাওয়া মানুষ’, ‘নিজস্ব প্রতিবেদক’, ‘ফুলের নামে নাম’, ‘একটা নির্জন দুপুর চাই’, ‘বাবা তোমার জন্য’ প্রভৃতি। বরাবরের মতো এই বছরও নাট্যাঙ্গনকে আলোকিত করে রাখেন নীলয় আলমগীর, আরফান নিশো, অপূর্ব, তৌসিফ মাহবুব, জোভান, মেহজাবীন, তাসনিয়া ফারিন, সাবিলা নূর, মিশু সাব্বির, মুশফিক ফারহান, সাফা, সজল, ইরফান সাজ্জাদ, মনোজ, তানিয়া বৃষ্টি, শামীম হাসান সরকার, তাসনুভা তিশা, টয়া, ইয়াশ রোহান, খাইরুল বাসার, সারিকা সাবাহ, মৌসুমী হামিদ, কেয়া পায়েল, সামিরা খান মাহি, আরশ খান, সাব্বির অর্নব, চাষী, জীবন সরকার, জান্নাতুল হিমি প্রমুখ।