ওহ্ রিয়েলি !

26 Feb 2025, 01:18 PM কাভার গার্ল শেয়ার:
ওহ্ রিয়েলি !

তিন বছর আটকে থাকার পর গেল মাসে মুক্তি পায় অনন্য মামুন পরিচালিত ‘মেকআপ’ ছবিটি। এই ছবির মাধ্যমে নায়িকা হিসেবে বড়োপর্দায় অভিষেক হলো নিপা আহমেদ রিয়েলির। ছবিটিসহ নানা প্রসঙ্গে কথা হয় এই অভিনেত্রীর সঙ্গে। বিস্তারিত লিখেছেন শেখ সেলিম....


একজন নতুন অভিনয়শিল্পী মাত্রই স্বপ্ন থাকে তার অভিষেক যেন ঘটা করে হয়। শিল্পী তার হৃদয়ে এই স্বপ্ন বুনন করে- মেধা, মনন ও প্রয়োজনীয় সময় দিয়ে চেষ্টা করেন কাজটি ভালো করার। যখন তার শিল্পকর্ম মুক্তি পায় এবং দর্শকমহলে নন্দিত হয়, তখন তার কাজের প্রতি আগ্রহ আরো বেড়ে যায়।

এমনই এক স্বপ্নকন্যা নিপা আহমেদ রিয়েলি স্বপ্ন দেখতেন একদিন তিনিও বড়োপর্দায় কাজ করবেন এবং সেই কাজটি হবে তার মনের মতো, পেয়েও গেলেন তার কাক্সিক্ষত চরিত্রটি। গল্পের নাম ‘মেকআপ’। পরিচালকের কাছে গল্প শুনে কাজ করতে রাজি হয়ে গেলেন। হবেনই-বা না কেন, সহশিল্পী হিসেবে পেলেন দেশের প্রথিতযশা অভিনয়লিল্পী তারিক আনাম খানকে, সেইসঙ্গে থাকছেন হালের ক্রেজ রোশানও। ভাবলেন এই রকম গুণীশিল্পীর সঙ্গে কাজ করলে নিজেকে ঝালিয়েও নেওয়া যাবে। সেইসঙ্গে জানতে পারলেন, ছবির কিছু অংশের শুটিং হবে হায়দ্রাবাদের ‘বাহুবলী’ ছবির সেটে। এ যেন রিয়েলির জন্য মেঘ না চাইতে বৃষ্টি ! সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দিয়ে কাজটি করেছেন তিনি। কাজটি করে বেশ খোশ মেজাজেই ছিলেন তিনি। ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুক্তিও পেল। চারদিক থেকে প্রসংশায় ভাসছেন তিনি। কিন্তু হঠাৎ করে কালো মেঘের ঘনঘটা। নিষিদ্ধ করা হয় ছবিটি। আচমকা এই খবরে রিয়েলির নিষ্পাপ মুখটি হয়ে গেল মলিন !

দীর্ঘদিন আটকে থাকার পর নতুন বছরের প্রথম মাসেই ২৬টি সিনেমা হলে মুক্তি পায় ছবিটি।

এই প্রসঙ্গে রিয়েলি বলেন, ছবিটা প্রথমে ওটিটি প্লাটফর্মে মুক্তি দেওয়া হয়। মুক্তির সময় সবাই জানতে পারে, ছবিটি সেন্সর বোর্ডে আটকে আছে। তখন সকলের মনে হয়েছে, ছবিতে এমন কিছু হয়ত আছে, যেটা আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে যায় না। অনেকে ফোন করে বলেছেন, তোমার ছবি নিষিদ্ধ হলো কেন ? অনেকেই ভেবেছেন, আগের মতো কাটপিস জুড়ে দিয়েছে কি না। সবাইকে বলতাম, ওটিটিতে দেখে নাও। আসলে কয়েকটা সংলাপের কারণে ছবিটি আটকে ছিল। আমি পরিবার নিয়ে ছবিটি দেখেছি। মুক্তির পর তারিক আনাম স্যার বলেছেন, ভালো করেছি। ছবি দেখার পর অনেক দর্শক বলেছেন, আপনাকে দেখে নতুন মনে হয়নি।

ছবিটি নিষিদ্ধ হওয়ায় কেমন লেগেছিল ? রিয়েলি বলেন, অনেক মন খারাপ হয়েছিল। সিনেমাটিতে আমরা যারা অভিনয় করেছি তারা জানি, সিনেমার গল্পে এমন কিছু নেই যে-কারণে এতদিন আটকে ছিল। যারা এখন দেখছেন সিনেমাটি, বুঝতে পারছেন আসল ঘটনা। আটকে থাকার মতো কিছুই ছিল না সিনেমার গল্পে।

সিনেমাটির গল্প গড়ে উঠেছে একজন সাধারণ মেয়ে কীভাবে সুপারস্টার হয় এবং তার স্টারডম ধরে রাখার জন্য সে যে পরিশ্রম করে তা নিয়ে। রিয়েলি মনে করেন, এই যে স্টারডম ধরে রাখার জন্য যে-পরিশ্রম দিতে হয় সেটাও তিনি রপ্ত করেছেন এই সিনেমায় কাজ করতে গিয়ে। রিয়েলি এটাও জানেন, এই পথে হোঁচট খেলে ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন, তাই তিনি খুব সাবধানে পা ফেলতে চান প্রতিটি ধাপে। রিয়েলি মনে করেন, বছরে পাঁচটি ছবি না করে মনের মতো একটি গল্পে কাজ করতে পারলে দর্শকের হৃদয় জয় করা সম্ভব।

তারিক আনাম খানের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে রিয়েলি বলেন, তার অভিনয়ের গুণের কথা সবাই জানেন। অসাধারণ একজন মানুষ তিনি। শুটিংয়ের সময় আমাকে বুঝতে দেননি, তার এবং আমার বয়েসের পার্থক্য। অনেক শিল্পীই তার কাছে যায় অভিনয় শিখতে। আর আমি তাকে আমার সহশিল্পী হিসেবে পেলাম। এর চেয়ে আনন্দের কিছু হতে পারে কি ! তার সঙ্গে গানের একটা দৃশ্য ছিল, তিনি আমাকে অনেক সাহায্য করেছিলেন।

বর্তমানে রিয়েলি একটি ওয়েব সিরিজের শুটিং শেষ করেছেন। এছাড়া ‘খোদা হাফেজ’ শিরোনামের একটি ছবি ঈদে আসবে বলে জানান তিনি। ‘মেকআপ’ মুক্তির পর অনেক নির্মাতাই যোগাযোগ রাখছেন নবাগত এই নায়িকার সঙ্গে। তাদের সঙ্গে ছবি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। বিয়েলি বলেন, আমি সারাবছর অভিনয় নিয়ে ব্যস্ত থাকতে চাই না, বছরে একটি ছবিতে কাজ করতে চাই, তবে সেটা হতে হবে মানসম্পন্ন।

‘মেকআপ’ সিনেমায় নায়িকা হিসেবে কেন তাকে নেওয়া হয়েছিল- এ প্রসঙ্গে রিয়েলি জানান, এই সিনেমার গল্পে পরিচালক চেয়েছিলেন একটা নতুন মুখ। সেখান থেকেই তিনি অনেকের মধ্য থেকে আমাকে বাছাই করেন। গল্পটা শোনার পর আমারও খুব ভালো লাগে। সব মিলিয়ে সিনেমাটি করা হয়েছে।