২৮ বছরের হাইলাইটস

02 Jun 2024, 12:41 PM আকাশলীনা শেয়ার:
২৮ বছরের হাইলাইটস

তানভীন সুইটি

এখনো মঞ্চেই আনন্দ খুঁজে পান

অভিনয়শিল্পী ও মডেল তানভীন সুইটি-কে নিয়ে আনন্দভুবনে ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দে ২য় বর্ষ ৬ সংখ্যা ১ আগস্ট, সংখ্যায় প্রচ্ছদ প্রতিবেদন করা হয়। শিরোনাম ছিল মৃন্ময়ী সুইটি। তখন সুইটি দারুণ জনপ্রিয় ছিলেন। এরপর ক্রমান্বয়ে সুইটি প্রচ্ছদে আসেন ২ বর্ষ ৬ সংখ্যা ১ আগস্ট ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দ, ৪ বর্ষ ১০ সংখ্যা ১ অক্টোবর ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দ, ৮ বর্ষ ১৪ সংখ্যা ১ ডিসেম্বর ২০০৩ খ্রিষ্টাব্দে।

১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দে ২য় বর্ষ ৬ সংখ্যা ১ আগস্ট, সংখ্যায় তার সম্পর্কে লেখা হয় : জন্মে নয়, সুইটি তার কর্মেই আলাদা। সত্যিই আলাদা। কেননা এখন যারা মডেলিং করছেন তারা তো অনেকেই টিভিতে-প্যাকেজে অভিনয় করেন, কেউ-বা এখন স্যাটেলাইট অভিনেতাও। তবে, সুইটির মতো থিয়েটারে আছেন ক’জন ! নাটক বিষয়ে একাডেমিক পদ্ধতিতে একবছর থিয়েটার স্কুলে পড়ে তারপরই থিয়েটার [বেইলি রোড]-এ যোগ দিয়েছেন সুইটি। ফ্যাশন শো করেছেন, করেছেন অনেক টিভি অ্যাড, টিভি নাটকও কয়েকটা তবু সুইটি নিজেকে মঞ্চের শিল্পী ভাবতেই ভালোবাসেন। ‘প্যাকেজ-টিভিতে প্রচার বেশি। কিন্তু থিয়েটারে না গেলে ভালো লাগে না। থিয়েটার একটা পরিবার, আমার দ্বিতীয় পরিবার। এতে গেলেই কিরে কেমন আছিস, কী খবর ... সবাই এত আপন। তাই তো থিয়েটারকেই প্রধান ভাবনা হিসেবে রেখেছেন সুইটি।

‘কলকাতায়, মধুসূদন মঞ্চে হাউজফুল শো, দর্শক দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে নাটক দেখছে। নাটক শেষ হতেই সবাই চেঁচিয়ে বলছে, দাদা আরেকবার করলে হয় না।’

মঞ্চ নিয়ে এত ভাবলেও সুইটি মডেলিং দিয়েই শুরু করেছিলেন।

শুধু থিয়েটারে কেন, যেখানেই যান সুইটি সবার সাথে এক হয়ে যান। তাই আমাদের সকলের সুইটি পত্রিকার সাথেও এক হয়ে গিয়েছিলেন।

লেখা : মুম রহমান

চলতি সময়ে

মডেলিং দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেন তানভীন সুইটি। এরপর প্রায় তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে অভিনয় করছেন তিনি। নাট্যদল থিয়েটারের সঙ্গেও যুক্ত রয়েছেন দীর্ঘদিন ধরে।

নব্বই দশকে বিটিভি ও টিভি চ্যানেলে যেসব তারকার অভিনয়ের আলোতে আলোকিত হয়েছেন ড্রয়িংরুম- তাদের অনেকেই এখন প্রায় অন্তরালে চলে গেছেন। মাঝে মাঝে দেখা মেলে কোনো ধারাবাহিক বা বিশেষ নাটকে। তাদেরই একজন তানভীন সুইটি। আগের মতো নিয়মিত অভিনয় না করলেও মাঝে মাঝে দেখা যায় এই অভিনেত্রীকে।

বর্তমানে দীপ্ত টিভির নতুন ধারাবাহিক ‘দেনা পাওনা’তে একঝাঁক নতুনের সঙ্গে দেখা যাচ্ছে তাকে।

টেলিভশনে কাজের পাশাপাশি ওটিটিতে-ও দেখা যাচ্ছে সুইটিকে। তার অভিনীত ‘কারাগার’ ও ‘দুই দিনের দুনিয়া’ বেশ সাড়া ফেলেছিল।

তিন দশকের ক্যারিয়ারে মাত্র পাঁচটি ছবিতে অভিনয় করেছেন সুইটি। মঞ্চ দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু, এখনো মঞ্চেই আনন্দ খুঁজে পান তাই মাঝে মাঝে মঞ্চেও কাজ করছেন তিনি। শুধু তাই নয়, তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় মহিলা বিষয়ক উপকমিটিরও সদস্য। 

লেখা : শেখ সেলিম


জাহিদ হাসান

এখন ব্যস্ত ওটিটি-তে


অভিনেতা জাহিদ হাসান প্রথম আন্দভুবনের প্রচ্ছদে আসেন ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দের ১ জুলাই ২ বর্ষ ৪ সংখ্যায়। শিরোনাম ছিল : ‘ধুলোর সিংহাসন’। এরপর আরো দু’বার প্রচ্ছদ তারকা হয়েছেন এই অভিনেতা। ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দের ১ জুলাই ২ বর্ষ ৪ সংখ্যায় তার সম্পর্কে লেখা হয় :

হাতিরপুলে নাকি এককালে ছিল নবাবের হাতিশালা, সে হাতি মার্চপাস্ট করে যেত এলিফ্যান্ট রোড ধরে। যেদিকটায় যেত সেদিকটায় ছিল নীলক্ষেত- সেখানে নীলকুঠি ছিল কি না সেকথা ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুন ভালো বলতে পারবেন- আমরা কেবল জানি, সেখানে পাওয়া যায় জাহিদ হাসানকে। আমাদের নিজেদের টিভিরাজ্যের নতুন নবাব তিনি, হাতিশালে হাতি আর ঘোড়াশালে ঘোড়া [নিদেনপক্ষে সার কারখানা] না পুষলেও উৎসাহের আস্তাবলে তিনি পুষে রাখেন প্রতিভার সহস্র হরিণ। নবাব নিজে কিন্তু বসেন ধুলোর সিংহাসনে, মাটির ভীষণ কাছে, হৃদয়ের আরো কাছাকাছি- নবাবী প্রাসাদ কিংবা টিভি তারকার প্লাস্টিকের ঘরে নয়।

এই তো জাহিদ হাসান- ধুলোর সিংহাসনে আসীন স্বপ্নের নবাব। এই তো জাহিদ হাসান- নির্বিবাদী, নির্ঝঞ্ঝাট, বন্ধু অন্তঃপ্রাণ, দিলখোলা আর অ্যাডভেঞ্চারময় প্রতিভায় ঘেরা।

এসব কারণেই হয়তো জাহিদ বড়ো গলায় বলতে পারেন- ‘আমি সিরাজগঞ্জের ছেলে। মফস্বল থেকে ঢাকায় এসেছি।’

নাট্যকেন্দ্রে জমে গেলেন জাহিদ। সিরাজগঞ্জে আ. খ. ম. আজাদের প্রেরণায় যে নাট্যবোধের সূচনা তার দাউদাউ হোমাগ্নিতে আরো জ্বালানি জোগালেন তারিক আনাম। চাচাতো ভাই বুলু প্রথমটায় তাকে বিলকুল পাত্তা না দিলেও নাট্যকেন্দ্রের বিচ্ছু দেখার পর পাল্টেছিলেন ধারণা।

সিনেমার প্রথম অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে জানা গেল অনেক কথাই- ‘নতুন মুখের সন্ধানের সুযোগে দিতি- সোহেল এরা তখন ফিল্মে চলে এসেছে। সেই সময়ে আমার দুলাভাই আবদুল লতিফ বাচ্চু ডেকে বললেন- হিন্দি জানিস ? বললাম- না। উর্দু জানিস ? না। পাসপোর্ট আছে ? না। তিনিই টাকা দিয়ে পাঠালেন, পাসপোর্ট করে আনলাম- গেলাম পাকিস্তানে। সেখানে আমার সিনেমায় কাজ করার কথা, অন্য তারকাদের মধ্যে ছিলেন শ্রীলংকার নায়িকা সবিতা আর পাকিস্তানের অমিতাভ বচ্চন বলে পরিচিত ইহাজার গাজি। করাচি গিয়ে দেখি সবিতা আর আমি একই হোটেলে আছি। এরপর করাচি থেকে আমরা লাহোর গেলাম, সেখানেই শুটিং। প্রথম দিনে প্রথম কাজ ছিল আমার। কাজ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়লাম ভাষা নিয়ে, পড়লাম মহামুশকিলে, সিকোয়েন্স আর বুঝতেই পারি না।

লেখা : অলোকা অরুন্ধতী, পলাশ শরীফ, মুম রহমান

চলতি সময়ে

টিভি নাটকের দর্শকপ্রিয় অভিনেতা জাহিদ হাসান। গত শতকের নয়ের দশকের শুরুতে টিভিনাটকে যে ক’জন জনপ্রিয়তা পান তাদের মধ্যে তিনি অন্যতম। ছবিতে অভিনয় করে পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। ব্যস্ত এই অভিনেতাকে এখন আর তেমন একটা অভিনয়ে দেখা যায় না। বর্তমানে তিনি বড়ো পর্দা ও ওটিটি প্লাটফর্মে বেশি কাজ করছেন। জাহিদ হাসানের অভিনয়ের নেশাটা চেপে বসেছিল স্কুলজীবন থেকে। যার জন্য কোথাও নাটক বা যাত্রাপালা হলে দেখতে যেতেন।

কলেজে পড়াকালীন তরুণ সম্প্রদায় নাট্যদলে যোগ দেন। সেই দলের হয়ে কয়েকটি নাটকে অভিনয় করেন। এরমধ্যে ‘সাত পুরুষের ঋণ’ নাটকটির কথা বলতেই হয়। নাটকটি ১৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দের ১০ আগস্ট বিটিভিতে সরাসরি প্রচার হয়।

ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়ে ভর্তি হন । কিন্তু, মন টানছে ঢাকা শহর। কিছুদিন সেখানে পড়ার পর চলে আসেন ঢাকায়। ঢাকায় পড়াশোনর পাশাপাশি ১৯৮৬ খ্রিষ্টাব্দে ‘বলবান’ নামের একটি সিনেমায় অভিনয় করার সুযোগ পান।

১৯৮৯ খ্রিষ্টাব্দে বিটিভিতে তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য অডিশন দিয়ে উত্তীর্ণ হন। ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দে ‘নাট্যকেন্দ্র’-এ ভর্তি হন। মঞ্চ নাটক শুরু করেন। এছাড়া একই বছর প্রথমবার টিভিনাটকে অভিনয় করার সুযোগ এসে যায়। প্রথম অভিনীত টিভি নাটকটির নাম ছিল ‘জীবন যেমন’। এই নাটকটি করার পর জাহিদ হাসানকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এরপর এখনো কাজ করে যাচ্ছেন এই গুণী অভিনেতা। 

লেখা : শেখ সেলিম

আফসানা মিমি

বহুমাত্রিক অভিযাত্রিক


অভিনয়শিল্পী ও নাট্যপরিচালক আফসানা মিমি প্রথম প্রচ্ছদে আসেন ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দের ১ ফেব্রুয়ারি। শিরোনাম ছিল নস্টালজিয়া- অথবা মিমি বিষয়ক একটি ব্যক্তিগত রচনা। এরপরে আরো কয়েকটি সংখ্যায় এই গুণী শিল্পীকে নিয়ে প্রচ্ছদ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রচ্ছদগুলো হলো : ৩ বর্ষ ৭ সংখ্যা ১৬ আগস্ট ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দ, ৮ বর্ষ ২ সংখ্যা ১ জুন ২০০৩ খ্রিষ্টাব্দ, ১৬ বর্ষ ২০ সংখা ১ মার্চ ২০১১ খ্রিষ্টাব্দ।

আফসানা মিমির কথা প্রথম শুনি মিঠুন ভাইয়ের কাছে। লোকে তাকে ঔপন্যাসিক আর গদ্যকার্টুনিস্ট আনিসুল হক হিসেবেই ভালো চেনে। তখনই জানতে পারি তার শ্বাসরুদ্ধকর রূপের কথা। তার রক্ষণাবেক্ষণে কিন্তু মিমির মনোযোগ সামান্যÑ ‘নাটকের জন্যে সারাক্ষণ এত সাজগোছ করতে হয় যে এদিকে আর মনোযোগ দেওয়া সম্ভব না। বিরক্তিই লাগে। সাজার ভয়ে পার্টিতে যেতেই চাই না।’ তিনি আরো লম্বা হলে ভালো হতো সে কথা বললে তিনি অম্লান বদনে বলেনÑ ‘আরো মানুষ আমাকে একথা বলেছে।’ তার মেলা পরে তাকে দেখি টিভির কোনো এক নাটকে। তারপর সিনেমার ট্রেলারে। তারো পরে আমার বোন অদিতির দেশ নাটক-এ যোগ দেওয়ায় ঘটলো আরেকটি যোগাযোগ। দুঃখের সাথে জানাতে হয়Ñ তাদের পরবর্তী প্রযোজনা মনোজ মিত্রের দর্পণে শরৎশশী বাছাই হবার সময়ে আমিও ছিলাম সাক্ষী। মঞ্চে বোধহয় মিমির সেটাই সেরা পারফর্মেন্স। আলী যাকেরের নির্দেশনায় অতিথি সাহায্য করেছিল, তাতে কাজ করেছিল আমার পছন্দের মেলা মানুষ। এরপর ঘটে কোথাও কেউ নেই-এর বকুল। যে থিয়েটারের সূত্রে তাকে চিনেছি সেই থিয়েটারের সাথেই তার সংসার গেছে ভেঙে। নিজের দল নাগরিক নাট্যসম্প্রদায়-এর জন্যে সময় দিতে পারেন কি না জানতে চাইলে বলেনÑ ‘থিয়েটার কি আমার সময় নিতে পারে ? পুরো থিয়েটার অঙ্গনই এই মুহূর্তে থিতিয়ে আছে। শো ছাড়া আর শো-র আগের দিন রিহার্সেল ছাড়া দলের কল থাকে না। যে নাটকে আমি কাজ করছি না সে নাটকের শোতেও যাওয়া হয় না। আমাদের একটা বড়ো ধরনের চেঞ্জ দরকার।’

পর্দায় আমরা যে মিমিকে চিনি তার বয়স কখনোই ভোট দেবার পর্যায়ে পৌঁছতে চায় না। চল্লিশোর্ধের চরিত্রে অভিনয় করার সময়েও মনে হয় তিনি পাকামোর চেষ্টা করছেন। পর্দার মিমি চির কিশোরী। দশ বছর আগে যা ছিলেন, এখনো তাই আছেন। প্রথম বকুল থেকে সবুজ সাথীর বকুল পর্যন্ত একই মানুষ তিনি। চশমা পরে কিংবা ভুরু কুঁচকেও তিনি বয়স্ক নন। এখনো আসল বয়সের অর্ধেক বলে তিনি দাবি করতে পারেন নিশ্চিন্তে। প্রত্যেক পুরুষের প্রথম প্রেমের স্মৃতি, প্রত্যেক মেয়ের স্কুল পালানোর প্রথম দিনÑ সেই বয়সটাতেই স্থায়ী ঠিকানা বানিয়েছেন তিনি। প্রত্যেক দর্শকের নিজস্ব নস্টালজিয়ার নাম মিমি।

লেখা : অদিত্য কবির

চলতি সময়ে

নয়ের দশকে টেলিভিশন নাটকের প্রিয়মুখ আফসানা মিমি এখন অভিনয়ে অনেকটাই অনিয়মিত। তবে মাঝে মধ্যে ওটিটিতে দেখা যায় তাঁকে। এবার এই অভিনেত্রী ফিরছেন মঞ্চে। নিজের দল নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের প্রযোজনায় দেখা যাবে তাকে।

৩৩ বছর আগে ‘দর্পণ’ নাটক দিয়ে নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের সঙ্গে পথচলা শুরু হয় আফসানা মিমির। ২০০২ খ্রিষ্টাব্দের শেষের দিকে ‘খাট্টা তামাশা’, ‘নূরলদীনের সারাজীবন’ ও ‘দেওয়ান গাজীর কিস্সা’ নাটকে দেখা গেছে তাকে। মাঝে ২০ বছর মঞ্চে দেখা যায়নি অভিনেত্রীকে। দুই দশক পর তিনি ফিরছেন ৩৩ বছর আগে অভিনয় করা সেই নাটক দিয়ে। মাঝে অবশ্য প্রাচ্যনাটে কাজ করেছেন এই অভিনেত্রী। এই দলের হয়ে ‘রাজা এবং অন্যান্য’ নাটকে ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দ থেকে টানা চার বছর অভিনয় করেছেন।

আফসানা মিমি অভিনয় এবং পরিচালনা উভয় অঙ্গনেই রেখেছেন দক্ষতার ছোঁয়া। হাসি, খুশি, গল্প, আড্ডা সব মিলিয়ে প্রাণবন্ত মানুষ তিনি। শোবিজে পথ চলার প্রায় আটত্রিশ বছর অতিক্রম করেছেন। পথ চলতে চলতে বহু বাধা-বিপত্তি এলেও থেমে যাননি। নিয়মিত অভিনয় করলেও নেপথ্যের কাজে আগ্রহ বেশি তার। গুণী এই অভিনেত্রী ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দের ২০ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন।

১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশ টেলিভিশনে ‘কোথাও কেউ নেই’ নাটকে [বকুল] চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে পরিচিতি লাভ করেন। তারপর থেকে বহু টেলিভিশন নাটক এবং বেশ কিছু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। বন্ধন, ডল’স হাউজ, কাছের মানুষ, মনের কথা, জীবন যে রকম, কথা দিলাম, সেই তুমি, বেদনার রং নীল, নক্ষত্রের রাত, ইতি তোমার আমি, অতিক্রম, অতসী নাটকে অভিনয় করেন। ১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দে আজিজুর রহমানের ‘দিল’ চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে বড়োপর্দায় অভিষেক হয় তার। 

লেখা : শেখ সেলিম

জয়া আহসান

এখন দুই বাংলায় সমান জনপ্রিয়


১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ মার্চ সংখ্যায় অভিনয়শিল্পী ও মডেল জয়া আহসানকে নিয়ে আনন্দভুবনে প্রথম প্রচ্ছদ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। শিরোনাম ছিল : জয়জয়ন্তী।

এরপর তিনি আরো কয়েকটি সংখ্যায় প্রচ্ছদে এসেছেন। সংখ্যাগুলো হলো ২ বর্ষ ২১ সংখ্যা ১৬ মার্চ ১৯৯৮, ৬ বর্ষ ২১ সংখ্যা ১ এপ্রিল ২০০২, ১৬ বর্ষ ৭ সংখ্যা ২০১১, ১৮ বর্ষ ১৫ সংখ্যা ১৬ ডিসেম্বর ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে। ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ মার্চ সংখ্যায় তার সম্পর্কে লেখা হয় :

ক’টা প্রেম করেছেন এ প্রশ্নের জবাবে জয়া আসল সত্যটা এড়িয়ে চোখ নাচিয়ে ছন্দ গাঁথলেন ‘অগণিত প্রেম, নিকষিত হেম।’ তারপর হাসি, ‘আজ পর্যন্ত একটাও চিঠি পাইনি। জয়াও গান ভালোবাসেন। গানই ছিল তার জীবনের মোক্ষ। লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য অনেক আগেই ভর্তি হয়েছেন সংগীতভবনে। রবীন্দ্রসংগীতে কোর্স কমপ্লিট করে বেরিয়েও এসেছেন। এখন সংগীতশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কয়েক বান্ধবী মিলে ৭ সেমিস্টারে গান শেখাচ্ছেন। তবে এর মধ্যে নিজের গান গাওয়ার ঝোঁকটা পাল্টে গেছে। কলিম শরাফী যখন তাকে বলেছিলেন ‘গানটা ছেড়ো না’ তখন থেকেই বিপত্তির শুরু। অতি উৎসাহে বিস্তর ক্লাসিকাল চর্চার ফলে এখন আর রবীন্দ্রসংগীত গেয়ে জুৎ পান না, নজরুল বা আধুনিক গানই ভালো লাগে গাইতে।

একটা অ্যাড ফার্ম। থ্রু রিপন ভাই। ছাতার মাথা কিছুই জানি না আমি। হঠাৎ করেই একদিন ডাক পড়লো। ডাক দিল কোকাকোলা। মহাচিন্তায় পড়লাম। কী করি, কী করি। একে বলি, তাকে বলি পরামর্শ চাই। বুদ্ধিটুদ্ধি খুঁজি। এই করতে করতেই শেষমেশ কোকাকোলার পোস্টার হয়ে গেলাম। দেশজুড়ে দেয়ালে দেয়ালে সেঁটে গেলাম। এভাবেই একদিন ঢুকে গেলাম ক্যালেন্ডারে, পা রাখলাম স্ট্যান্ডার্ড চার্টারড ব্যাংকের আঙিনায়। হেসে উঠলাম পত্র-পত্রিকার পাতা জুড়ে। তারপর এখানে ওখানে একটু আধটু। একটু নাটক, একটি এটিএন। হুট করে একদিন সাংবাদিকও হয়ে গেলাম। টিভি সাংবাদিক ! মাইক্রোফোন হাতে সোজা জেলখানা। ঘটনার আড়ালে। আবেদ ভাই-এর শত উৎসাহ। বললেন, ‘হবে হে, তোমাকে দিয়ে হবে।’

খুব ইচ্ছা ছিল- আমি গানের শিল্পী হবো। দারুণ বলবো না, তবে কণ্ঠটা আমার খারাপও নয় খুব একটা। গান শিখেছি। এখনো চেষ্টা চলছে। কিন্তু ...। হয়ে হয়েও হচ্ছে না।

লেখা : আনন্দ আহসান

চলতি সময়ে

দুই বাংলাতেই বেশ জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান। দু’দশকেরও বেশি সময় ধরে অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। শুরুটা নাটকের মাধ্যেমে হলেও ধীরে ধীরে তিনি সিনেমায় অভিনয় শুরু করেন। সেই সময়েই জয়া প্রেমের বন্ধনে আবদ্ধ হন মডেল ও অভিনেতা ফয়সাল আহসানের সঙ্গে। ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দে বিয়ে হয় অভিনেত্রীর। কিন্তু ২০১১ খ্রিষ্টাব্দে বিচ্ছেদ হয় তাঁদের। তারপর থেকে অভিনয়েই আরও বেশি করে মন দেন জয়া। শুরুতে নাটকে অভিনয় করে তিনি পরিচিতি পান। পরে সিনেমায় অভিনয় শুরু করেন। নূরুল আলম আতিক পরিচালিত ‘ডুবসাঁতার’ দিয়ে জয়া নাম লেখান বড়ো পর্দায়। অভিনয়ের স্বীকৃতি হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ এবং টালিউডের সিনেমার পরে তিনি নাম লিখিয়েছেন বলিউডেও। টালিউডে দারুণ জনপ্রিয় জয়া অহসানের বছরের বেশ কিছু সময় কলকাতাতেই কাটে। 

লেখা : শেখ সেলিম

নাদিয়া আহমেদ

অতিক্রম করলেন দুই যুগ


নৃত্য ও অভিনয়শিল্পী নাদিয়া আহমেদ প্রথম প্রচ্ছদে আসেন ১ মার্চ ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দ ৮ বর্ষ ২০ সংখ্যায়। শিরোনাম নাদিয়ার বেড়ে ওঠা। পরবর্তীসময়ে আরো কয়েকবার প্রচ্ছদে আসেন তিনি। প্রচ্ছদগুলো হচ্ছে ৯ বর্ষ ১৩ সংখা ১৬ নভেম্বর ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দ, ১৮ বর্ষ ৬ সংখ্যা ১ আগস্ট ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দ, ১৪ বর্ষ ২০ সংখ্যা ১ মার্চ ২০১০ খ্রিষ্টাব্দ, ১৫ বর্ষ ৭ সংখ্যা ১৬ আগস্ট ২০১০ খ্রিষ্টাব্দ, ২০ বর্ষ ২ সংখ্যা ১ জুন ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দ।

১ মার্চ ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে নাদিয়াকে নিয়ে যা লেখা হয় তার কিছু অংশ তুলে ধরা হলো : বসরা নগরী কি কারণে বিখ্যাত ? নাদিয়ার উত্তর গোলাপের জন্য। এই বিখ্যাত নগরীতে জন্মেছিলেন নাদিয়া। খুবই ছোটোবেলার কথা। তবে এতটুকু জানেন, ইরাকের সংস্কৃতি খুব সমৃদ্ধ। মানুষগুলো অসম্ভব ভালো। তাই বুশ ইরাক আক্রমণের পর সাদ্দামের জন্য তার মন কাঁদেনি। কেঁদেছে ইরাকের মানুষগুলোর জন্য। সেই নাদিয়া এখন অনেক বড়ো। কত বড়ো ? লম্বায় ৬২.৫ ইঞ্চি মানে ৫ ফুট আড়াই ইঞ্চি। প্রস্থটা না হয় নাই বললাম।

হ্যাঁ হ্যাঁ নাদিয়া জোর দিয়ে বলেন, বই পড়লে অনেকগুলো চরিত্র চোখের সামনে ভেসে ওঠে। যেমন, আমি একটি বই পড়ছিলাম, সিংহবাহিনী। যৌথ পরিবারের একজন সিনিয়র সদস্য মারা গেলে কে কাকে ঠকাবে, কে সম্পত্তি কতটুকু পাবে এই দৌড়ঝাপ নিয়ে কাহিনি। আমার মনে হয়, দৃশ্যগুলো আমার চোখে ভাসছে। উঠতি আর পড়তি সময়ে শিল্পীরা সাংবাদিকদের ভারি কদর করেন। মধ্যগগনে সামান্য সমালোচনাতে তেঁতে ওঠেন। কেন রে ভাই ! নাদিয়া উত্তর দিলেনÑ কাজের সমালোচনাতে সবাই মাইন্ড করেন না। ব্যক্তিগত নেতিবাচক আলোচনার প্রতিবাদ করেন। বিশেষ করে স্ক্যান্ডাল নিয়ে পারিবারিকভাবে আমরা কখনো কখনো বিব্রত হই, তখন।

নাদিয়া শুধু নাচ আর অভিনয়ই করেন না, মডেলিংও করেন। তিব্বত লিপজেল-এর আজ আমার হারাবার নেই মানাতো ভালো হিট। শাহেদের সঙ্গে আরেকটি করেছেন ওয়ালটন ফ্রিজের অ্যাড। পন্ডস ট্যালকম, আফজাল হোসেনের সানক্রেস্ট, ইলিয়াস খান কল্লোলের মিতালী টেক্সটাইল ইত্যাদি। প্রচার অপেক্ষায় আছে ফারদিনের সঙ্গে ওয়ালটন মোরসাইকেলের বিজ্ঞাপনচিত্র।

লেখা : সৈকত সালাউদ্দিন

চলতি সময়

অভিনয় ও নাচ দুই মাধ্যমেই নিয়মিত তিনি। এই বছর ক্যারিয়ারের দুই যুগ অতিক্রম করলেন এই অভিনেত্রী। নাদিয়াও মনে করেন এই যাত্রার মূল শক্তি দর্শক। দর্শক ভালোবেসেছেন বলেই তিনি ২৪ বছর ধরে বিরামহীন কাজ করে চলেছেন। দর্শকের প্রতি কৃতজ্ঞতাও জানান তিনি। তবে তার সমসাময়িক অনেকে বড়োপর্দায় কাজ করলেও নাদিয়া বরাবরই অনাগ্রহ দেখিয়েছেন। তবে, ক্যারিয়ারের ২৪ বছরে এসে এবার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন সিনেমায় অভিনয় করার। ইতোমধ্যে বেশ কিছু সিনেমার অফারও এসেছে, আসছে। কিন্তু গল্প ভালো লাগেনি বলে করা হয় নি। সিনেমার জন্য ভালো কোনো গল্প বা ভালো কোনো চরিত্রের জন্য অপেক্ষা করছেন তিনি। নাদিয়া অভিনীত একাধিক ধারাবাহিক নাটক বিভিন্ন চ্যানেলে প্রচার হচ্ছে। পাশাপাশি বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অনুষ্ঠানগুলোতে নৃত্যও পরিবেশন করছেন তিনি। সবমিলিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন এই অভিনেত্রী।

নাদিয়া শিশুশিল্পী হিসেবে ১৯৮৬ খ্রিষ্টাব্দে বিটিভির শিশুমেলা নামের একটি ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানে প্রথম কাজ করেন। তারপর বিটিভির ছোটোদের অনুষ্ঠানে নিয়মিত অংশগ্রহণ করেন। শিশুশিল্পী হিসেবেই জনপ্রিয়তা পান, হয়ে ওঠেন লিটল স্টার।

১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দে নতুন কুঁড়ির অভিনয় শাখায় অংশগ্রহণের সময় থেকেই অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসার জন্ম। আর এই ভালোবাসা থেকেই টিভিনাটকে অভিনয়। ১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দে বিটিভির সেসময়ের তুমুল জনপ্রিয় ‘বার রকমের মানুষ’ ধারাবহিকের ‘বৈচি’ চরিত্রের মাধ্যমে অভিনেত্রী নাদিয়া পরিচিতি পান। শিশুশিল্পী থেকে পরিণত শিল্পীতে রূপান্তরিত হন। সেই থেকে টিভিনাটকে নিয়মিত অভিনয়। বিভিন্ন চ্যানেলে প্রচারিত ‘ছায়াকায়া’, ‘দৃষ্টিদান’, ‘মধ্যবর্তী’, ‘প্রজাপতি মন’, ‘ইট কাঠের খাঁচা’, ‘অগ্নিগিরি’, ‘অধ্যাপক’, ‘শেষের রাত্রি’ প্রভৃতি নাটকে নাদিয়ার অভিনয় দর্শক নন্দিত হয়। 

লেখা : শেখ সেলিম

অপি করিম

রূপকথার রাজকন্যা


অভিনয়, মডেল ও নৃত্যশিল্পী অপি করিম প্রথম প্রচ্ছদে আসেন ১৬ মার্চ ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দের ৩ বর্ষ ২১ সংখ্যায়। শিরোনাম ছিল : ‘সাধারণ মেয়ে’। এরপর আরো কয়েকটি সংখ্যায় তাকে নিয়ে প্রচ্ছদ প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। প্রচ্ছদগুলো হলো : ৫ বর্ষ ২২ সংখ্যা ১ এপ্রিল ২০০১ খ্রিষ্টাব্দ, ১১ বর্ষ ২২ সংখ্যা ১৬ এপ্রিল ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দ। প্রথমে প্রচ্ছদ প্রতিবেদন ‘সাধারণ মেয়ে’-তে তাকে নিয়ে যা লেখা হয় :

চিনবে না আমাকে তেমনটাই কথা ছিল। কবিগুরু অন্তত তাই লিখেছিলেন তাঁর ‘সাধারণ মেয়ে’ কমিতায়। অন্তঃপুরের নিতান্ত সাধারণ মেয়ে মালতীকে না চেনা যেতে পারে কিন্তু আমাদের এই ইট পাথরের শহরে একজন সাধারণ মেয়ে অপি করিমকে চিনতে হয় বৈকি। অপিকে নাই-বা চিনলেন গুরুদেব বা শরৎচন্দ্র এই বাংলাদেশের নয়া জামানার লোকজন যে তাকে শুধু চিন পরিচয় নয় রীতিমতো খাতির করতে শুরু করেছে তা তো মিথ্যে নয়। অপির কিন্তু আজকের স্টার নন। সেই যখন ফুটফুটে ছোট্টো বাচ্চাটি, তখন থেকেই তিনি স্টার। ধারাবাহিক নাটক ‘সকাল সন্ধ্যা’য় মোড়লের নাতনীর চরিত্রে অভিনয় করে অপি পেয়েছিলেন ব্যাপক খ্যাতি। তখন আরো কয়টি নাটক করে পড়ালেখার জন্য কিছুদিন করেই ছেড়ে ছিলেন তারকা হওয়ার সাধনা।

সেই ছোট্টোবেলায়, হামাগুড়ি থেকে দুই পায়ে দাঁড়ানোর পর থেকেই শুরু হয়েছে তার নৃত্যচর্চা। ভর্তি হয়েছিলেন বাফায়। বড়ো বোন পপিও ছিলেন সেখানেই। দু’জনে ভালোই নাচানাচি করছিলেন। হঠাৎ বৃত্তি দেওয়ার কারণে বাসা থেকে বন্ধ করে দেওয়া হলো অপির নাচ শেখা। অপিও তো ছাড়বার পাত্র নন মোটেই। বেঁকে বসলেন- ঠিক আছে, এখন আপাতত নাচ শেখা বন্ধ করছি। কিন্তু কথা দিতে হবে বৃত্তি পেলে পুরস্কারস্বরূপ শিবলী মোহাম্মদের কাছে নাচ শেখার অনুমতি দিতে হবে। সবাই বললেন তথাস্তু। অপিও নেমে পড়লেন আদাজল খেয়ে। যেদিন বৃত্তি পাওয়ার ঘোষণা এলো, সেদিনই তাকে নিয়ে যাওয়া হলো শিবলী মোহাম্মদের কাছে। অপি করিম মানেই একসময়ের ক্রেজ। তার সাবলীল অভিনয় ও হাসি দেখে এমন দর্শক খুঁজে পাওয়া যাবে না তার প্রেমে পড়েন নি। এককথায় মেধা, দক্ষতা আর সহজাত প্রতিভা দিয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন এক অনন্য উচ্চতায়। পুরো নাম সৈয়দা তুহিন আরা অপি করিম। মডেল, নৃত্যশিল্পী, উপস্থাপিকা, শিক্ষিকা, সেট ডিজাইনার এবং অভিনেত্রী সংস্কৃতির প্রায় সবগুলো শাখায় নিজের দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন তিনি।

লেখা : নজরুল ইসলাম, জিনাত জাহান

চলতি সময়ে

অপি করিমের যাত্রা শুরু হয় শিশুশিল্পী হিসেবে, বিটিভির বহুল আলোচিত এবং জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘সকাল সন্ধ্যা’য় অভিনয় করেন তিনি। এরপর অনেকদিন বিরতি দিয়ে ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে অপি করিম মিস ফটোজেনিক পুরস্কার জয় করেন। পরবর্তীসময়ে এই মেয়েটির মাঝেই বাংলাদেশের মানুষ দেখা পায় একজন মিষ্টি হাসি আর অপূর্ব মায়াভরা চেহারার একজন অভিনেত্রীর। যিনি সাধারণ হয়েও মানুষের মন গেঁথে থাকেন রূপকথার রাজকন্যা হয়ে।

সেই ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দেই ‘তেপান্তরের রূপকথা’ টেলিফিল্মের মাধ্যমে অভিনেত্রী হিসেবে যাত্রা শুরু অপির। তবে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘৫১বর্তী’ ধারাবাহিক দিয়ে নিজেকে জনপ্রিয়তার শিখরে নিয়ে যান তিনি। সব প্রজন্মের দর্শকদের কাছ থেকেই পেয়েছেন ভালোবাসা এবং প্রশংসা।

টেলিভিশনে বর্ণিল ক্যারিয়ারে স্বীকৃতি হিসেবে দুই বার দর্শক জরিপে এবং দুইবার সমালোচক জরিপে মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার পান। অভিনয়ে পাশাপাশি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তার নৃত্য পারদর্শিতাও অবাক করেছে ভক্তদের। ছেলেবেলা থেকেই নাচ শিখতেন অপি। শাস্ত্রীয় নাচের তালিম নিয়েছেন তিনি দীর্ঘদিন। এই অভিনেত্রী নাট্য সংগঠন নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের সদস্য হিসেবে নিয়মিত যুক্ত আছেন মঞ্চনাটকে। বড়োপর্দায়ও অভিনয় করেছেন তিনি। মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘ব্যাচেলার’ সিনেমায় অভিনয় করেন তিনি। স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার। তবে পরবর্তীসময়ে আর কোনো সিনেমায় অভিনয় করেননি তিনি। তবে প্রায় চৌদ্দ বছর বিরতি দিয়ে তিনি ফিরেছেন ‘মায়ার জঞ্জাল’ সিনেমার মধ্য দিয়ে। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘বিষাক্ত প্রেম’ ও ‘সুবালা’ ছোটগল্প অবলম্বনে নির্মিত এই সিনেমায় অপি করিমকে ‘সোমা’ নামের কলকাতার একটি মেয়ের চরিত্রে দেখা যায়। গায়িকা হিসেবেও নিজের প্রতিভার প্রমাণ দিয়েছেন তিনি। ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে সাগর জাহান রচিত ঈদের নাটক ‘এ শহর মাধবীলতার না’-এর জন্য কণ্ঠ দেন।

লেখা : শেখ সেলিম

তারিন

নতুন অধ্যায়ের শুরু কলকাতায়


অভিনয় ও নৃত্যশিল্পী তারিনকে নিয়ে আনন্দভুবনে প্রথম প্রচ্ছদ করা হয় ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দের ২ বর্ষ ২০ সংখ্যা, ১ মার্চে। এরপর [৩ বর্ষ ২৪ সংখ্যা] ১ মে, ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে তাকে নিয়ে পুনরায় প্রচ্ছদ করা হয় । পরবর্তীসময়ে আরো কয়েকবার তাকে প্রচ্ছদে নিয়ে আসা হয়। ৫ বর্ষ ১০ সংখ্যা ১ অক্টোবর ২০০০ খ্রিষ্টাব্দ, ৩ বর্ষ ২৪ সংখ্যা ১ মে ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে, ১৩ বর্ষ ৩ সংখ্যা ১৬ জুন ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে, ১৪ বর্ষ ১৩ সংখ্যা ১৬ নভেম্বর ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দ।

৫ বর্ষ ১০ সংখ্যা ১ অক্টোবর ২০০০ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল ‘পাততারিন’। এতে তার সম্পর্কে লেখা হয় :

পাততাড়ি গুটিয়ে গুটি গুটি পায়ে, ধীর ধীর পায়ে, দৃঢ় দৃঢ় পায়ে, পায়ে পায়ে মেঠো পথ... সড়ক... রেলপথ... রাজপথ...। যেতে হবে অনেক দূর, অনেক অনেক দূর। যেমন এসেছেন তারিন, যেমন আসছেন তারিন। কুঁড়ি থেকে তারিন আজ কুড়ি [নায়িকাদের বয়েস জানতে নেই]। বয়েসের জোরে কুড়ি, প্রতিভার জোরে বুড়ি। প্রতিভার বার্ধক্য তো চির যৌবনবতী। অনেকটা তারিনের মতো। আসলে তারিন আর প্রতিভা বোধহয় একই কথার এপিঠ ওপিঠ। নইলে কি আর ...। নইলে কি আর তারিন আজ ...। আসলে তারিনের কোনো সীমান্ত নেই। যেমন প্রতিভারও নেই কোনো সীমান্ত। সেই তারিন, সেই সাফল্য, সেই তারিনের গল্প ....

নাচ, গান, আবৃত্তি কিংবা ছড়াকাটা, পুরনো বন্ধু, ইচ্ছেখুশি, মাসিপিসি, পুরনো বয়েস, কুমিল্লা, মিশনারি স্কুল, স্কুলমাঠ, ঘাসফড়িং, জীর্ণ মলিন... প্রভৃতি, ইত্যাদি, যতকিছু, সবকিছু। ছেড়ে চলে এসেছেন তারিন। গুটিয়েছেন সব মাঠ। সবদিক ছেড়ে কেবল একদিকে, অভিনয়ের দিকে। চলেছেন তারিন। অবশ্য নদীর যেমন উপনদী থাকে, তারিনেরও তেমনি আছে উপদিক- মডেলিং।

লেখা : নজরুল ইসলাম

চলতি সময়ে

সেই নতুন কুঁড়ি দিয়ে পথ চলতে থাকা ইয়াসমিন জাহান তারিন এখন বাংলাদেশের বিনোদন জগতের প্রিয়মুখ। তার মিষ্টি মোহনীয় হাসি আর ডাগর ডাগর চোখের চাহনিতে মন ভোলেনি এমন ভক্ত বা দর্শক খুঁজে পাওয়াই দুষ্কর। ১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করা এই অভিনেত্রী ১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দে ক্ষুদে অভিনেত্রী হিসেবে ‘এইসব দিনরাত্রি’ নাটকের মধ্য দিয়ে ছোটোপর্দায় পা রাখেন। ৩৯ বছর বয়সে এসেও এ প্রজন্মের অভিনেত্রীদের সাথে সমান তালে পা মিলিয়ে চলছেন তিনি। অনেক সহশিল্পী ধীরে ধীরে হারিয়ে গেলেও তিনি কিন্তু ঠিকই এখনো টিকে আছেন।

বিনোদনজগতের এই প্রিয় মুখের নতুন অধ্যায় শুরু হলো এবার কলকাতায়। বাংলাদেশের গণ্ডিপেরিয়ে প্রতিবেশী দেশেও অভিষেক হলো তারিনের। ‘এটা আমাদের গল্প’ নামের একটি সিনেমায় অভিনয় করেছেন তারিন।

সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গে মুক্তি পেয়েছে সিনেমাটি। পরিচালনা করেছেন ছোটো ও বড়োপর্দার দাপুটে অভিনয়শিল্পী মানসী সিনহা। জানা গেছে, সিনেমায় তারিন বাংলাদেশের মেয়ে। যার বিয়ে হয় কলকাতার বনেদি পরিবারে। সিনেমায় অপরাজিতা আঢ্যের ছেলের বউয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন তারিন। চরিত্রের নাম মিসেস বসু। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে টালিউডে অভিষেক সিনেমার পোস্টার এবং কোন কোন হলে সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে জানিয়ে পোস্ট দিচ্ছেন অভিনেত্রী। তারিনের পাশাপাশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন শাস্ত্র চট্টোপাধ্যায়, অপরাজিতা আঢ্য, সরাজ মুখোপাধ্যায়, কনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সোহাগ সেন, আর্য দাশগুপ্ত, তাপসী মুন্সীসহ অনেকে। 

লেখা : শেখ সেলিম

ঈশিতা

কিশোরীবেলাতেই স্পর্শ করেছেন জনপ্রিয়তার শীর্ষবিন্দু


অভিনয়, নৃত্য ও কণ্ঠশিল্পী ঈশিতা প্রথম প্রচ্ছদে আসেন ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দের ১ জুন দি¦তীয় বর্ষ দ্বিতীয় সংখ্যায়। শিরোনাম ছিল ‘চুড়োকে বলো না একা’। এরপরে আরো কয়েকটি সংখ্যায় তাকে প্রচ্ছদে নিয়ে আসা হয়। প্রচ্ছদগুলো হচ্ছে ৬ বর্ষ ১৯ সংখ্যা ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০০২ খ্রিষ্টাব্দ, ৮ বর্ষ ১২ সংখ্যা ১ নভেম্বর ২০০৩, ৯ বর্ষ ১০ সংখ্যা ১ অক্টোবর ২০০৪, ১৭ বর্ষ ২০ সংখ্যা ১ মার্চ ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে। ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দের ১ জুন ২য় বর্ষ ২য় সংখ্যায় তাকে নিয়ে লেখা হয়Ñ

চূড়োকে বলো না একা, শীর্ষে তার বসেছে গৃধিণীÑ এক ভূমিকা পদ্যে লিখেছিলেন কবি জয় গোস্বামী। ঈশিতাকে তিনি চেনেন না নিশ্চিত, তবু যেন রুমানা রশীদ ঈশিতাকে নিয়েই লেখা তার সে পদ্য। ’৮৮ থেকে ’৯১ পর্যন্ত নতুন কুঁড়িতে দাপটের সাম্রাজ্য শাসন করার সাথেই তার পায়ের নিচে পাতা হয়ে গেছে জনপ্রিয়তার চূড়ান্ত শিখর। নতুন কুঁড়ির পাট চোকার পরও তার সে জনপ্রিয়তা অব্যাহত থেকে গেছে বিটিভির পর্দায় অটুট উপস্থিতির কল্যাণেÑ ছোটোদের জন্য তৈরি তার প্রথম নাটক সূর্য এলো ফিরে, বড়োদের জন্য তৈরি তার প্রথম নাটক দুজনে, তার প্রথম ধারাবাহিক নাটক রূপকথা, ’৮৮ থেকে ’৯৬ পর্যন্ত ছোটোদের জন্য তৈরি বড়ো সব অনুষ্ঠানের উপস্থাপনাÑ এমনি নানা কিছুতে। মঞ্চে ঈশিতা অভিনীত ফালানি চরিত্রের দুঃখে কেঁদেছেন দেশের প্রেসিডেন্ট, সারা বাংলাদেশ মাথা ঘামিয়েছে তারিন আর ঈশিতার এপিক প্রতিদ্বন্দ্বিতায়, প্রতিটি পত্রিকায় বিরাট করে ছাপা হয়েছে ছোট্টো মেয়েটার রঙিন ছবি ...। আর ঈশিতা একা থেকে হয়ে গেছেন আরো একা। ছোট্টো মেয়েটির জনপ্রিয়তা আছে কিন্তু অবসর নেই, অনুরাগী আছে কিন্তু বন্ধু নেই, কাজ আছে কিন্তু খেলা নেই। ‘আমাকে তো খুব ডিসিপ্লিনড থাকতে হয়’Ñ বলেছেন তিনি নিজেইÑ ‘দুষ্টামি করার স্কোপই পাইনি কখনো।’

৪ বছর বয়সে মা যখন তাকে বাফায় নিয়ে গিয়েছিলেন নাচের ক্লাসে ভর্তি করতে তখন অল্পবয়সী বলে তাকে ভর্তিই করতে চাননি বাফার কর্তৃপক্ষ। ক্লাস সিক্সে পড়তেই নাচের কোর্স সম্পূর্ণ করেছিলেন, কিন্তু বাফার নিয়ম অনুযায়ী এসএসসি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে সার্টিফিকেটের জন্য।

নাচের সার্টিফিকেট পাওয়ার আগেই শুরু হয়ে গিয়েছিল গান শেখাও। তার সাথে অভিনয়, আবৃত্তি+ কত কি ! ঈশিতা পারে না এমন কিছু কি আছে আদৌ ?

লেখা : অলোকা অরুন্ধতী

চলতি সময়ে

রুমানা রশিদ ঈশিতা টেলিভিশন নাটকের অন্যতম দর্শকপ্রিয় একজন অভিনেত্রী। টিভি নাটকে তার পথচলা অনেক বছরের। বলতে গেলে একটি প্রজন্মের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। ঈশিতাকে দীর্ঘদিন টিভিপর্দায় না দেখা গেলেও পর্দার পেছনে কাজ করেছেন তিনি। চ্যানেল আইয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন দীর্ঘদিন। মাঝে মাঝে কিছু কাজ করে আলোচনায় থাকেন এই অভিনেত্রী। সম্প্রতি ‘ইতি মা’ নাটকে অভিনয় করে নতুন করে আলোচনায় এসেছেন। বিটিভি থেকেই শোবিজ অঙ্গনে ঈশিতার পদচারণা। একসময় বিটিভিতে অনেক কাজ করেছেন তিনি। প্যাকেজ আসার পরও অনেক কাজ করেছেন তিনি। তাই বিটিভির প্রতি রয়েছে তার অগাধ ভালোবাসা। ঈশিতার দুই সন্তান। সন্তানদের নিয়েই এখন ঈশিতার যত ব্যস্ততা। এই ব্যস্ততার কারণে আপাতত আর চাকরিতে ফেরা সম্ভব হচ্ছে না। তবে গল্প খুব ভালো লাগলে মাঝেমধ্যে পর্দায় দেখা যেতে পারে তাকে। অভিনয়ের পাশাপাশি সংগীতশিল্পী হিসেবে ঈশিতার পাঁচটি অ্যালবাম প্রকাশিত হয়। সর্বশেষ অ্যালবাম প্রকাশিত হয় ১৫ বছর আগে। তবে সংগীতচর্চা কখনো থামেনি। বিয়ে, চাকরি, অভিনয়, পরিচালনাÑ এসব করতে গিয়ে গান নিয়ে বিশেষ কোনো পরিকল্পনা করা হয়নি। তবে নৃত্যে তাকে আর দেখার সম্ভাবনা নেই। লেখালেখিতেও ঈশিতার হাত রয়েছে। তার লেখা দু’টি ছোটো গল্পের বই প্রকাশিত হয়। হ

লেখা : শেখ সেলিম

ঐন্দ্রিলা

এখন রান্নাঘরে


অভিনয়শিল্পী ঐন্দ্রিলা প্রথম প্রচ্ছদে আসেন ১৬ অক্টোবর ২০০১ খ্রিষ্টাব্দের ৬ বর্ষ ১১ সংখ্যায় শিরোনাম ছিল : ঐন্দ্রিলা। পরবর্তীসময়ে আরো কয়েকটি প্রচ্ছদে আসেন তিনি। প্রচ্ছদগুলো হচ্ছে ২৩ বর্ষ ১০ সংখ্যা ১ অক্টোবর ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দ, ২৫ বর্ষ ১৪ সংখ্যা ১ ডিসেম্বর ২০২০ খ্রিষ্টাব্দ।

২০০১ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ অক্টোবর ১১ সংখ্যায় তাকে নিয়ে যা লেখা হয় :

স্রেফ সুন্দরী বিষয়টি এখন আর নারীর সৌন্দর্যের মাপকাঠি নয়। অন্তত এই কম্পিউটার জেনারেশনের যুগে। ঐন্দ্রিলা তা জানেন। দেবরাজ ইন্দ্রের রাজ্যের সেরা সুন্দরীর নামে যার নামÑ ডাগর দু’টি চোখ, চোরা চাহনী, দুধে আলতা গায়ের রং সব মিলিয়ে স্নিগ্ধ সুন্দরী হয়েই ঐন্দ্রিলা একজন রাজকুমারের জন্য বসে থাকতে পারতেন। কিন্তু তিনি একজন পরিপূর্ণ মানুষ হতে চেয়েছেন। যিনি অভিনয় করেন, পড়াশোনা, মডেলিং থেকে রান্না কিংবা সেলাই করা সব কিছু সম্বন্ধে তার জ্ঞান অর্জন চলছে। ঐন্দ্রিলা স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসেন। ছোটো বৃত্তে নয়। বড়ো ক্যানভাসে। উম্ম তিনি ছবিও আঁকেন। পেন্সিল, রংতুলি নিয়ে খুব বেশি আঁকেন মানুষের চোখ আর প্রকৃতি। প্রকৃতির সৌন্দর্যের কোনো সীমারেখা নেই তো, তাই।

এমন একজন কন্যাকে নিয়ে নিশ্চয়ই গর্বিত হতে পারেন বাবা তবাররক আহমেদ। থুক্কু, বুলবুল আহমেদ নামটির বিশালতার কারণে এই আসল নামটি কিন্তু হারিয়েই গেছে। ঐন্দ্রিলার পিতামহ খলিল আহমেদও ছিলেন একাধারে অভিনেতা, নাট্যকার, চলচ্চিত্র সংগঠক। বাবা বুলবুল আহমেদ অনুষ্ঠান ঘোষণা করতেন, আবৃত্তিকার, মঞ্চ, বেতার, টিভি অভিনেতা আর চলচ্চিত্র অভিনয়ের পাশে একাধারে প্রযোজক এবং পরিচালক।

নাচ তার সবচাইতে প্রিয় কলা। ‘সংগীতভবন’ থেকে কত্থক ও ভরত নাট্যমের ওপর দীক্ষা নিয়েছেন। লায়লা হাসানের কাছে শিখেছেন সাধারণ নৃত্য। বিটিভর রজতজয়ন্তী অনুষ্ঠানে নাচের অনুষ্ঠানে পারফর্ম করেন যখন তিনি দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়েন। তবে ঐন্দ্রিলার মূল পরিচিতি গড়ে উঠেছিল শিশুশিল্পী হিসেবে। যখন তিনি পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র, ইমদাদুল হক মিলনের ধারাবাহিক নাটক রূপনগর তাকে বিখ্যাত করে তোলে।

লেখা : সৈকত সালাউদ্দিন

চলতি সময়ে

মহানায়কখ্যাত প্রয়াত চলচ্চিত্র অভিনেতা বুলবুল আহমেদের মেয়ে ঐন্দ্রিলা আহমেদ। তার মা ডেইজি আহমেদও ছোটোপর্দার গুণী অভিনেত্রী। তবে বাবা ও মায়ের পরিচয়ের বাইরেই ঐন্দ্রিলা দেশীয় শোবিজে নিজের আলাদা একটি অবস্থান তৈরি করে নিয়েছেন। টিভি নাটকের দর্শকনন্দিত এই অভিনেত্রী অভিনয়ের পাশাপাশি উপস্থাপনাতেও অনবদ্য। তবে বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ‘পার্টনারশিপ অ্যানালিস্ট ম্যানেজার’ হিসেবে কর্মরত। যে কারণে চাইলেও তিনি আর নিয়মিত অভিনয় করতে পারেন না। তবে উপস্থাপনা নিয়মিত করে চলেছেন তিনি। অভিনয়ে তিনি যেমন দর্শকের মন জয় করে নিয়েছেন, ঠিক তেমনি উপস্থাপনাতেও দর্শকের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেন। বর্তমানে শুধু বাংলাভিশনে তার উপস্থাপনায় এবং সুব্রত দের প্রযোজনায় প্রচার হচ্ছে ‘আমাদের রান্নাঘর’ অনুষ্ঠানটি।

অভিনয়ের প্রতি তার ভালোবাসা রয়েছে, সুযোগও আসে অনেক। কিন্ত ‘ওটিটি প্ল্যাটফর্ম, টিভি নাটকের জন্য যে স্ক্রিপ্ট আসে, সেগুলো মনের মতো হয় না বিধায় কাজ করা হয়ে উঠে না। 

লেখা : শেখ সেলিম